পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ক্ষণকাল অপেক্ষা করিয়া প্রত্যুত্তরে স্বামীর নাসিকাধনি শুনিয়া রাগ করিয়া উঠিয়া গেলেন । সারারাত্রি তাহার লেশমাত্র ঘুম আসিল না। কখন সকাল হইবে, কখন হরিশকে দিয়া উকিলের চিঠি পাঠাইয়া ছেলের দাবী করিবেন, চিঠি পাইয় তাহারা কিরূপ ভীত ও অমৃতপ্ত হইয়া কানাইকে রাখিয়া যাইবে, এই সমস্ত আশা ও আকাশ-কুমুমের কল্পনা তাহাকে সমস্ত রাত্রি সজাগ করিয়া রাখিল । প্রভাত হইতে না হইতে তিনি হরিশের দ্বারে আসিয়া আঘাত করিয়া বলিলেন, মেজঠাকুরপো, উঠেচ ? হরিশ ব্যস্ত হইয়া দ্বার খুলিয়া আশ্চর্ষ্য হইয়া গেলেন । সিদ্ধেশ্বরী কহিলেন, দেরি করলে চলবে না, এখখুনি ছোটঠাকুরপোদের নামে উকিলের চিঠি লিখে, দুরোয়ান পাঠাতে হবে । তুমি বেশ করে একখানা চিঠি লিখে বলে দাও যে, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে জবাব না পেলে নালিশ করা হবে। হরিশকে এ-বিষয়ে উত্তেজিত করা বাহুল্য । তিনি তৎক্ষণাৎ রাজী হইয়া, গলা খাটো করিয়া প্রশ্ন করিলেন, ব্যাপারটা কি বল দেখি বড়বে ? বসে, বসো—কি কি নিয়ে গেছে ? দাবীটা একটু বেশী করে দেওয়া চাই। বুঝলে না ? সিদ্ধেশ্বরী থাটের উপর আসন গ্রহণ করিয়া, চক্ষু প্রসারিত করিয়া তাহার দাবীট বিবৃত করিলেন । # বিবরণ শুনিয়া হরিশের হৰ্ষোৰ্জ্জল মুখ কালি হইয়া গেল। কহিলেন, তুমি কি ক্ষেপেচ বড়বৌঠান ? আমি বলি, বুঝি আর কিছু। তাদের ছেলে তারা নিয়ে গেছে, তুমি করবে কি ? সিদ্ধেশ্বরী বিশ্বাস করিলেন না। বলিলেন, তোমার দাদা যে বললেন, নালিশ করলে তাদের সাজ হয়ে যাবে। .مr হরিশ কহিলেন, দাদা এমন কথা বলতেই পারেন না । তোমাকে তামাসা করেচেন । সিদ্ধেশ্বরী রাগ করিয়া কহিলেন, এতটা বয়স হ’লো তামাসা কাকে বলে বুঝিনে ঠাকুরপো ? তোমার মনোগত ইচ্ছে নয় যে, ছেলে দুটােকে কাছে আনি। তাই কেন স্পষ্ট করে বল না ? হরিশ লজ্জিত হইয়া তখন বহু প্রকারে বুঝাইবার চেষ্টা করিলেন যে, এ দাবী আদালত গ্রাহ করবে না । তার চেয়ে বরং আর কোন দাবী-দাওয়া উত্থাপন করিয়া জব্দ করা যাইতে পারে । আমাদের উচিত এখন তাই করা । সিদ্ধেশ্বরী ক্ৰোধতরে উঠিয়া দাড়াইলেন, কছিলেন, তোমার উচিত তোমার ধাক ঠাকুরপোঁ; আমার তিনকাল গিয়ে এককাল ঠেকেচে, এখন মিথ্যে দাবী-দাওয়া 3&v