পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ দয়াল। (চিন্তান্বিত-মুখে ) কিন্তু বিজয় যে নিজে সন্মতি দিয়েছেন। রাসবিহারীবাবুর সুমুখে নিজের হাতে কাগজ সই করে দিয়েছে! নলিনী । দিক। ওর হাত সই করেছে কিন্তু হৃদয় সই করেনি, ওর জিভ সম্মতি দিয়েছে কিন্তু অন্তর সন্মতি দেয়নি। সেই মুখ আর হাতই বড় হবে মামাবাবু, তার অস্তরের সত্যিকায় অসম্মতি যাবে ভেসে ? দয়াল। তুমি এ-কথা জানলে কি করে নলিনী ? নলিনী । আমি জানি। আজ যাবার সময় নরেনবাবুর মুখ দেখেও কি তুমি বুঝতে পারনি ? দয়াল ও দয়ালের স্ত্রী । ( সমস্বরে ) নরেন ? অামাদের নরেন ? নলিনী । ই তিনিই। দয়াল । অসম্ভব ! একেবারে অসম্ভব । নলিনী । (হা সয়া) অসম্ভব নয় মামাবাবু, সত্যি। দয়াল । ( সজোরে ) কিন্তু বিজয়া যে আমাকে নিজে বললেন— নলিনী । কি বললে ? দয়াল । বললেন, তোমার আর নরেনের পানে একটু চোখ রাখতে। বললেন, নরেনের উচিত তোমার সম্বন্ধে তার মনোভাব স্পষ্ট করে জানাতে— নলিনী । ( সলজ্জে ) ছি ছি, নরেনবাবু যে আমার বড় ভায়ের মত মামবাৰু? দয়ালের স্ত্রী । কি আশ্চৰ্য্য কথা ! তুমি আমাদের জ্যোতিষকে ভুলে গেলে ? তার বিলেত থেকে ফিরতে তো আর দেরি নেই । দয়াল। জ্যোতিষ ? আমাদের সেই জ্যোতিষ ? দয়ালের স্ত্রী । ই ই, আমাদের সেই জ্যোতিষ । ( হাসিয়া ) এই অন্ধ মানুষটিকে নিয়ে আমার সারাজীবন কাটল । দয়াল। আমি এথ খুনি যাব নরেনের বাসায়। দয়ালের স্ত্রী । এত রাত্রে ? কেন ? দয়াল । কেন ? জিজ্ঞাসা করছ, কেন ? আমার কর্তব্য আমি স্থির করে ফেলেছি -সে থেকে কেউ আর আমাকে টলাতে পারবে না । নলিনী । তুমি শান্ত মানুষ মামাবাবু, কিন্তু কৰ্ত্তব্য থেকে তোমাকে কে কবে টলাতে পেরেছে ? কিন্তু আজ রাতে নয়—তুমি কাল সকালে যেও । দয়াল । তাই হবে মা, আমি ভোরের গাড়িতেই বেরিয়ে পড়ব। নলিনী । আমি তোমার চা তৈরি করে রাখৰ মামাবাৰু। কিন্তু ওপরে চল, তোমার খাবার সময় হয়েছে । স্বয়াল । চল । { সকলের প্রস্থান ) \óፄ8