পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ f পরবর্তী কালে ছিলেন Statesman কাগজের Reporter. বার বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকিয়াও খরতর কল্পনার সাহায্যে report দাখিল করার জন্য র্তাহার চাকরি গিয়াছিল এবং কাগজের সম্পাদককে লাঞ্ছিত হুইতে হইয়াছিল। আজ বিনয় পরলোকগত। মৃত ব্যক্তিকে লইয়া এইসকল কথা লিখিতে আমার ক্লেশবোধ হয় |- - - - - - কিন্তু ইহা বাহ। আসলে উত্যক্ত করিয়াছে কতকগুলি অতি কৌতুহলী লোকের অশিষ্ট ও অমার্জনীয় জিজ্ঞাসাবাদ । উহারা প্রশ্ন করিয়াছে, আমার কাছে.সাহিত্য-ব্যাপারে কে কতটা ঋণী । লোকেরা এ-পেশ্ন আমাকেও যে না করিয়াছে তাহা নয় কিন্তু যে কেহ জিজ্ঞাসা করিয়াছে তাহাকেই অকপটে এই সত্য কথাটাই চিরদিন বলিয়াছি যে আমার কাছে লেশমাত্র কেহ ঋণী নয়। এইস্থানে এক সময়ে ছেলে-বয়সে সাহিত্যচর্চা করিতে থাকিলে লোক পরস্পরকে উৎসাহ দিয়াই থাকে, ভালো লাগিলে ভালো বলিয়া বন্ধুজনের অভিনন্দিত করিয়াই থাকে, তাহাকে ঋণ বলিয়া অভিহিত করিতে গেলে মানুষের ঋণের কোথাও আর সীমা থাকে না। যেমন স্বরেন, গিরীন, উপেন, তেমনি বিভূতি...প্রভৃতি। লেখা পড়িয়া ভালো লাগিলে ভালো বলিয়াছি—কোথাও তেমন ভালো না লাগিলে ছিড়িয়া ফেলিয়া আবার লিখিতে অনুরোধ করিয়াছি । কোনদিন সংশোধন করি নাই । এতকাল পরে এই সকল কথা ব্যক্ত করার উদ্দেশ্য আমার শুধু এই যে, এ সম্বন্ধে আমার বক্তব্য যেন লিপিবদ্ধ হইয়া থাকিতে পারে। এইবার আমার নিজের সম্বন্ধে দুই-একটা কথা বলিয়া এ আলোচনা শেষ করিতে চাই । ছেলেবেলার লেখা কয়েকটা বই আমার নানা কারণে হারাইয়া গেছে । সবগুলার নাম আমার মনে নেই। শুধু দুখান বইয়ের নষ্ট হওয়ার বিবরণ জানি । একখানা, অভিমান, মস্ত মোট খাতায় স্পষ্ট করিয়া লেখা,—অনেক বন্ধুবান্ধবের হাতে হাতে ফিরিয়া অবশেষে গিয়া পড়িল বাল্যকালের সহপাঠী কেদার সিংহের হাতে । কেদার অনেকদিন ধরিয়া অনেক কথা বলিলেন, কিন্তু ফিরিয়া পাওয়া আর গেল না। এখন তিনি এক ঘোর তান্ত্রিক সাধুবাবা। বইখানা কি করলেন তিনিই জানেন —কিন্তু চাহিতে ভরসা হয় না -র্তার সিদুর মাখানো মস্ত ত্রিশূলটার ভয় করি। এখন তিনি নাগালের বাইরে—মহাপুরুষ—ঘোরতর তান্ত্রিক সাধুবাবা। দ্বিতীয় বই ‘শুভদা । প্রথম যুগের লেখা ওটা ছিল আমার শেষ বই, অর্থাৎ ‘বড়দিদি,’ ‘চন্দ্রনাথ’, ‘দেবদাস’ প্রভৃতির পরে *

  • 'ছোটদের মাধুকরী, আশ্বিন, ১৩৪৫

చిg