পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ হয়ত পিতলের, সোনার হইতেও পারে, চুল ছোট নয়, গেরো দেওয়া পিঠের উপর ঝুলিতেছে, গলায় তুলসীর মালা, হাতে থলির মধ্যেও তুলসীর জপমালা। ছাপছোপের খুব বেশী আড়ম্বর নাই, কিংবা সকালের দিকে ছিল, এ বেলায় কিছু কিছু মুছিয়া গিয়াছে। ইহার মুখের দিকে চাহিয়৷ কিন্তু ভয়ানক আশ্চৰ্য্য হইয় গেলাম । সবিস্ময়ে মনে হইল এই চোখ-মুখের ভাবটা যেন পরিচিত এবং চলার ধরণটাও খেল পূৰ্ব্বে কোথাও দেখিয়াছি। বৈষ্ণবী কথা কহিল । সে যে নীচের স্তরের লোক নয় তৎক্ষণাৎ বুঝিলাম। সে কিছুমাত্র ভূমিকা করিল না, সোজা আমার প্রতি চাহিয়া কহিল, কি গোসাই, চিনতে পার ? যলিলাম, না, কিন্তু কোথায় যেন দেখেচি মনে হচ্চে । বৈষ্ণবী কহিল, দেখেচ বৃন্দাবনে। বড়গোসাইঞ্জীর কাছে খবরটা শোননি এখনো ? বলিলাম, তা শুনেচি। কিন্তু বৃন্দাবনে আমি ত কখন জন্মেও যাইনি ! বৈষ্ণবী কহিল, গ্যাছে বইকি। অনেককালের কথা হঠাৎ স্মরণ হচ্ছে না । সেখানে গরু চরাতে, ফল পেড়ে জানতে, বনফুলের মালা গেঁথে আমাদের গলায় পরাতে-সব ভুলে গেলে ? এই বলিয়া ঠোট চাপিয়া মৃদু মৃদু হাসিতে লাগিল । বুঝিলাম তামাশা করিতেছে, কিন্তু আমাকে, না বড়গোসাইজীকে, ঠিক ঠাহর করিতে পারিলাম না । কহিল, রাত হয়ে আসচে, আর জঙ্গলে বসে কেন ? ভেতরে চলো । বলিলাম, জঙ্গলের পথে আমাদেরও অনেকটা যেতে হবে । বরঞ্চ কাল আবার জাসব । বৈষ্ণবী জিজ্ঞাসা করিল, এখানের সন্ধান দিলে কে ? নবান ? ই, সেই । কমললতার খবর বলেনি ? ই, তাও বলচে । বোষ্টমীর জাল ছিড়ে হটাৎ বার হওয়া যায় না, তোমাকে সাবধান করে দেয়নি । সহাস্তে কহিলাম, ই, তাও দিয়েচে । বৈষ্ণবী হাসিয়া ফেলিল, কহিল, নবীন ইলিয়ার মাৰি । তার কথা না শুনে ভাল করোনি । κ%" কেন বল ত ? বৈষ্ণবী ইহার জবাব ছিল না, গহরকে দেখাইয়া কহিল, গোসাই বলে, তুমি বিদেশে স্বাচ্চ চাকরি করতে তোমার ত কেউ নেই, চাকরি করবে কেন ? &te