পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত আমি গো—তোমার সস্থ্যেবেলার বন্ধু। এত সুধোতেও পার! অন্ধকার ঘরে চৌকাঠের কাছে দাড়াইয়া কমললতা বৈষ্ণবী ? বলিলাম, জেগে থেকে লাভ হ’তো কি ? তবু সময়টার একটু সদ্ব্যবহার হ’লো। তা জানি। কিন্তু ঠাকুরের প্রসাদ পাবে না ? পাব । তবে ঘুমোচ্চ যে বড় ? জানি বিঘ্ন ঘটবে না, প্রসাদ পাবই। আমার সন্ধ্যাবেলাকার বন্ধু রাত্রেও পরিত্যাগ कद्रष्य न ! বৈষ্ণবী সহাস্তে কহিল, সে দাসী বৈষ্ণবের, তোমাদের নয় । বলিলাম, আশা পেলে বোষ্টম হতে কতক্ষণ । তুমি গহরকে পর্য্যস্ত গোসাই বানিয়েচ, আর আমিই কি এত অবহেলার ? হুকুম করলে বোষ্টমের দাসাচুদাস হতেও রাজী । কমললতার কণ্ঠস্বর একটুখানি গম্ভীর হইল, বৈষ্ণবদের সম্বন্ধে তামাশা করতে নেই গোসাই, অপরাধ হয়। গহরগোসাইজীকেও তুমি ভুল বুঝেচ । তার আপন লোকেরাও তাকে কাফের বলে, কিন্তু তারা জানে না সে খাটি মুসলমান, বাপপিতামহর ধৰ্ম্মবিশ্বাস সে ত্যাগ করেনি । কিন্তু তার ভাব দেখে ত তা মনে হয় না । বৈষ্ণবী কহিল, সেইটেই আশ্চৰ্য্য। কিন্তু আর দেরি করো না, এসো। একটু ভাবিয়া কহিল, কিংবা প্রসাদ না হয় তোমাকে এখানেই দিয়ে যাই—কি বল ? বলিলাম, আপত্তি নেই। কিন্তু গহর কোথায় ? সে থাকে ত দু’জনকে একত্রেই झाँ४3नां । তার সঙ্গে বসে খাবে ? বলিলাম, চিরকালই ত ধাই। ছেলেবেলায় ওর মা আমাকে অনেক ফলার মেখে দিয়েচে, তোমাদের প্রসাদের চেয়ে সে ত কম মিষ্টি হ’তে না । তা ছাড়া গহুর ভক্ত, গহুর কবি-কবির জাতের খোজ করতে নেই । অন্ধকারেও মনে হইল বৈষ্ণবী একটা নিশ্বাস চাপিয়া ফেলিল, তারপরে কহিল, গহরগোসাইজী নেই, কখন চলে গেছে আমরা জানতে পারিনি । কহিলাম, গহরকে দেখলাম সে উঠানে বসে। তাকে কি তোমরা ভেতরে যেতে ['8 न । বৈষ্ণী কহিল, না । বলিলাম, গহরকে আজ আমি দেখেচি । কমললতা, আমার তামাশাতে তুমি রাগ করলে, কিন্তু তোমাদের ঠাকুরের সঙ্গে তোমরাও বড় কম তামাশা করচ না। 8°