পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐকান্ত আর একবার তাহার মুখেরপানে চাহিয়া দেখিলাম । এবার আর সন্দেহের লেশমাত্র রছিল না যে, সে পরিহাস করিতেছে না । আমি মে মাত্র উপলক্ষ তাহাও নিশ্চিত, কিন্তু যে কারণেই হোক এখানের বঁাধন ছিড়িয়া এই মানুষটি পলাইতে পারিলেই যেন বঁচে—তাহার এক মূহূৰ্ত্তও বিলম্ব সহিতেছে না। ঘরে আসিয়া থাইতে বসিলাম । অতি পারিপাটি প্রসাদ । পলায়নের ষড়যন্ত্রট। জমিত ভালো, কিন্তু কে একজন অত্যস্ত জরুরী কাজে কমললতাকে ডাকিয়া লইয়া গেল। সুতরাং একাকী মুগ বুজিয়াই সেবা সমাপ্ত করিতে হইল। বাহিরে আসিয়া কাহাকেও বড় দেখিতে পাই না, বাবাজী দ্বারিকাদাসই বা গেলেন কোথায় ? দুইচারিজন প্রাচীন বৈষ্ণবী ঘোরাঘুরি করিতেছে-কাল সন্ধ্যায় ঠাকুরঘরে ধোয়ার ঘোরে ইহাদেরই বোধ হয় অপারা মনে হইয়াছিল, কিন্তু আজ দিনের বেলায় কড়া আলোতে কল্যকার সেই অধ্যাত্ম-সৌন্দৰ্য্যবোধটা তেমন অটুট রহিল না, গা-ট। কেমনতর করিয়া উঠিল, সোজা আশ্রমের বাহিরে চলিয়া আসিলাম । সেই শৈবালাচ্ছন্ন শীর্ণকায়া মন্দস্রোতা সুপরিচিত স্রোতস্বর্তী এবং সেই লতাগুল্ম কণ্টকাকীর্ণ তটভূমি এবং সেই সৰ্পসস্কুল মুদৃঢ় বেতসকুঞ্জ ও স্ববিস্তৃত বেণুবন । দীর্ঘকালের অনভ্যাসবশত: গা ছমছম করিতে লাগিল । অন্যত্র যাইবার উপক্রম করিতেছি, কোথাও একটি লোক আড়ালে বসিয়াছিল, উঠিয়া কাছে আসিয়া দাড়াইল । প্রথমটা আশ্চৰ্য্য হইলাম এ জায়গাতে ও মানুষ থাকে । লোকটির বয়স হয়ত আমাদের মত—আবার বছর দশেকের বেশী হওয়া বিচিত্র নয়। খৰ্ব্বাকৃতি রোগা গড়ন, গায়ের রঙটা খুব কালো নয় বটে, কিন্তু মুখের নীচের দিকটা যেমন অস্বাভাবিক রকমের ছোট, চোখের ভ্ৰ দুটাও তেমনি অস্বাভাবিক রকমের দীঘে-প্রস্থে বিস্তীর্ণ, বস্তুতঃ এত বড় ঘন মোটা ভুরু যে মানুষের হয় ইতিপূৰ্ব্বে এ জ্ঞান আমার ছিল না, দূর হইতে সন্দেহ হইয়াছিল, হয়ত প্রকৃতির কোন হাস্তকর খেয়ালে একজোড়া মোটা গোফ ঠোঁটের বদলে লোকটার কপালে গঙ্গাইয়াছে। গলাজোড়া মোট তুলসীর মালা, পোষাক-পরিচ্ছদও অনেকটা বৈষ্ণবদের মত, কিন্তু ধেমন ময়লা তেমনি छौ4 : प्रवाहे ! থমকিয়া দাড়াই বলিলাম, আজ্ঞা করুন । আপনি এখানে কবে এসেচেন শুনতে পারি কি ? পারেন । এসেচি কাল বৈকালে । স্বাঞ্জিতে আখড়াতে ছিলেন বুঝি } ከ ፃ