পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ জিজ্ঞাসা করিলাম, আমাকে পৌছে দিয়ে আশ্রমেই জাবার ফিরে আসবে ত ? বৈষ্ণবী বলিল, হা । সেই ছোট টাকার থলিটি সে বিছানায় রাখিয়া দিয়া কহিল, এই তোমার ব্যাগ । এটা পথে সাবধানে রেখো, টাকাগুলো একবার দেখে নাও । হঠাৎ মুখে কথা যোগাইল না, তারপরে বললাম, কমললত, তোমার মিছে এ পথে আসা। একদিন নাম ছিল তোমার উষা, আজো সেই উধাই আছ—একটুও বদলাতে পারনি । কেন বল ত ? তুমি বল ত কেন বললে আমাকে টাকা গুনে নিতে ? গুনে নিতে পারি বলে কি সত্যই মনে করো ? যারা ভাবে একরকম, বলে অন্য রকম, তাদের বলে ভণ্ড । যাবার আগে বড়গোসাইজীকে আমি নালিশ জানিয়ে যাব আখড়ার খাতা থেকে তোমার নামটা যেন তিনি কেটে দেন । তুমি বোষ্টমদলের কলঙ্ক। সে চুপ করিয়া রহিল। আমি ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিলাম, আজ আমার যাবার ইচ্ছে নেই। নেই? তা হলে আর একটু ঘুমোও। উঠলে আমাকে খবর দিও—কেমন ? কিন্তু এখন তুমি করবে কি ? আমার কাজ আছে। ফুল তুলতে যাব। এই অন্ধকারে ? ভয় করবে না ? না, ভয় কিসের ? ভোরের পূজোর ফুল আমি তুলে আনি। নইলে ওদের बफ़ कटे श्ब्र । ওদের মানে অন্যান্য বৈষ্ণবীজের । এই দুটো দিন এখানে থাকিয়া লক্ষ্য করিতেছিলাম যে, সকলের আড়ালে থাকিয় মঠের সমস্ত গুরুভারই কমললতা একাকী বহন করে । তাহার কর্তৃত্ব সকল ব্যবস্থায়, সকলের পরেই। কিন্তু স্নেহে, সৌজন্তে ও সৰ্ব্বোপরি সবিনয় কৰ্ম্মকুশলতায় এই কর্তৃত্ব এমন সহজ শৃঙ্খলায় প্রবহমান ষে, কোথাও ঈর্ষা, বিদ্বেষের এতটুকু আবর্জনাও জমিতে পায় না । এই আশ্রমলক্ষ্মীটি জাজ উৎকণ্ঠ-ব্যকুলতায় যাই বাই করিতেছে। এ যে কত বড় দুর্ঘটনা, কত বড় নিরুপায় দুৰ্গতিতে এতগুলি নিশ্চিন্ত নরনারী স্থলিত হইয়াপড়িবে তাহ নিঃসন্দেহ উপলব্ধি করিয়া আমারও ক্লেশ বোধ হইল। এই মঠে মাত্র ছুটি দিন আছি, কিন্তু কেমন যেন একটা আকর্ষণ অনুভব করিতেছি-ইহার আস্তরিক শুভাকাঙ্ক্ষা না করিয়াই যেন পারি না এমনি মনোভাব | ভাবিলাম লোকে মিছাই বলে সকলে মিলিয়া আশ্রম-এখানে সবাই সমান। কিন্তু একের অভাবে যে কেন্দ্ৰভ্ৰষ্ট উপগ্রহের মত সমস্ত আয়তনই দিগ্বিদিকে বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িতে পারে ভাষা too