পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ গুড়গুড়ির নল গেল, কিন্তু পরিবর্তে তাহার হাতটা রহিল আমার মুঠোর মধ্যে । জিজ্ঞাসা করিলাম, বন্ধু আজকাল কি বলে ? রাজলক্ষ্মী একটু মান হাসিন্ধা কহিল, বৌমার ঘরে এলে সব ছেলেই যা বলে एलांहे ! তার বেশী কিছু নয় ? - কিছু নয় তা বলিনে, কিন্তু ও আমাকে কি দুঃখ দেবে ? দুঃখ দিতে পার শুধু তুমি । তোমরা ছাড়া সত্যিকার দুঃখ মেয়েদের আর কেউ দিতে পারে না । কিন্তু আমি কি দুঃখ কখনো তোমাকে দিয়েচি লক্ষ্মী ? রাজলক্ষ্মী অনাবশুক আমার কপালটা হাত দিয়া একবার মুছিয়া দিয়া বলিল, কখনো না। বরঞ্চ আমিই তোমাকে আজ পৰ্য্যস্ত কত দুঃখ দিলুম। নিজের মুখের জন্ত তোমাকে লোকের চোখে হেয় করলুম, খেয়ালের ওপর তোমার অসম্মান হতে দিলুম - তার শাস্তি এখন তাই দু’কুল ভাসিয়ে দিয়ে চলচে। দেখতে পাচ্চ ত ? হাসিয়া বলিলাম, কই না ! রাজলক্ষ্মী বলিল, তাহলে মস্তর পড়ে কেউ দু'চোখে তোমার ঠুলি পরিয়ে দিয়েচে । একটু চুপ করিয়া থাকিয়া কহিল, এত পাপ করেও সংসারে এত ভাগ্য আমার মত কারো কখনো দেথেচ ? কিন্তু আমার তাতেও আশা মিটলো না, কোথা থেকে এসে জুটল ধর্থের বাতিক, আমার হাতের লক্ষ্মীকে আমি পা দিয়ে ঠেলে দিলুম। গঙ্গামাটি থেকে চলে এসেও চৈতন্য হ’লো না, কাশী থেকে তোমাকে অনাদরে বিদায় त्रिशूष । তাহার দুই চোখ জলে টলটল করিতে লাগিল, আমি হাত দিয়া মুছাইরা দিলে বলিল, বিষের গাছ নিজের হাতে পুতে এইবার তাতে ফল ধরল। খেতে পারিনে, গুতে পারিনে, চোখের ঘুম গেল শুকিয়ে, এলোমেলো কত কি ভয় হয় তার মাৰামুণ্ডু নেই—গুরুদেব তখন বাড়িতে ছিলেন, তিনি একটা কবজ হাতে বেঁধে দিলেন, বললেন, মা, সকাল থেকে এক আসনে তোমাকে দশ হাজার ইষ্টনাম জপ করতে হবে। কিন্তু, পারলুম কই ? মনের মধ্যে ছ’ছ করে, পূজোয় বসলেই দু'চোখ বেয়ে জল গড়াতে থাকে—এমনি সময়ে এলো তোমার চিঠি। এতদিনে রোগ ধরা পড়ল । কে ধরল-গুরুদেব ? এবার বোধ হয় আর একটা কবজ লিখে দিলেন ? ই গো দিলেন। বলে দিলেন সেটা তোমার গলায় বেঁধে দিতে। তাই দিও, তুীতে যদি তোমার রোগ সারে। রাজলক্ষ্মী বলিল, সেই চিঠিখানা নিয়ে আমার দু’দিন কাটল। কোথা দিয়ে ষে কাটল জানিনে। রতনকে ডেকে তার হাতে চিঠির জবাব পাঠিয়ে দিলুম। پانیا