পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ একটিমাত্র পণ! আবার ষেদিন দেখা হবে, এ কৰা তুমিও সেদিন স্বীকার করবে । ডাক্তার ব্যগ্র হইয়া বলিয়া উঠিলেন হঠাৎ এ আবার কি গুরু করে দিলে ভারতী ? ঐ ছেঞ্চা কম্বলটুকু কি আমি নিজে পেতে নিতে পারতাম না ? এর ত কোন দরকার ছিল না । ভারতী কহিল, তোমার ছিল না বটে, কিন্তু আমার ছিল । ষার জন্তে যখনই বিছানা পাতি দাদা, তোমার ওই ছেড়া কম্বলটুকু আর কখনো ভুলব না । মেয়েমানুষের জীবনে এরও যদি না দরকার থাকে ত কিসের আছে বলে দিতে পারো ? ডাক্তার হাসিয়া কছিলেন, এর জবাব আমি দিতে পারলাম না বোন, তোমার কাছে আমি হার মানচি। কিন্তু তুমি ছাড়া নিজের পরাজয় আমাকে কোন দিন কোন মেয়েমানুষের কাছেই স্বীকার করতে হয়নি। ভারতী হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করিল, স্বমিত্রাদিদির কাছেও না ? ভাক্তার মাথা নাড়িয়া বলিলেন, না । শয্যা প্রস্তুত হইলে ডাক্তার তাহার বেঁচেকার আসন ছাড়িয়া বিছানায় আসিয়া উপবেশন করিলেন। ভারতী অদূরে মেঝের উপর বসিয়া ক্ষণকাল অধোমুখে নীরবে ৰাকিয়া কহিল, যাবার পূৰ্ব্বে আর একটি কথা যদি তোমাকে জিজ্ঞাসা করি, ছোট বোনের অপরাধ মাপ করবে ? করব । ভবে বল মুমিত্রাদিদি তোমার কে ? কোথায় তাকে তুমি পেলে ? তাহার প্রশ্ন শুনিয়া ডাক্তার অনেকক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন, তাহার পরে ছু হাসিয়া কহিলেন, ও যে আমার কে, এ জবাব সে নিজে না দিলে আর জানবার উপায় নেই। কিন্তু, যেদিন ওকে চিনতাম না বললেও চলে, সেদিন নিজেই আমি স্ত্রী বলে ওর পরিচয় দিয়েছিলাম। সুমিত্র নাম আমারই দেওয়া,—আজ সেইটেই বোধ করি ওর নজির । ভারতী গভীর কৌতুহলে স্থির হইয়া চাহিয়া রহিল। ডাক্তার কছিলেন, শুনেচি, ওর মা ছিল নাকি ইহুদী মেয়ে, কিন্তু বাপ ছিলেন বাঙালী ব্রাহ্মণ । প্রথমে সার্কাসের দলের সঙ্গে জাভায় যান, পরে মুরাভায়া রেলওয়ে স্টেশনে চাকরি করতেন। যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন সুমিত্রা মিশনারিদের স্কুলে লেখাপড়া শিখতো, তিনি মারা বাবার পরে বছর পাচ-ছরের ইতিহাস আর তোমার স্তনে কাজ নেই। ভারতী মাথা নাড়িয়া কহিল, না দাদা, সে হবে না, তুমি সমস্ত বল। তাক্তার কহিলেন, আমিও সমস্ত জানিনে ভারতী, গুৰু এইটুকু জানি যে, মা, १*$