শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰই ডাক্তার মুচকিয়া হাসিলেন। ভারতীর দুইচক্ষু শ্রদ্ধা ও স্নেহে অশ্রুসজল হইয়া কহিল, এ বিশ্বাস না থাকলে কি এমন করে তোমাকে আত্মসমর্পণ করতে পারতাম ? আমি ত নবতারা নই। আমি জানি, আমার সমস্ত ভুল হয়ে গেছে,— কিন্তু এ জীবনে সংশোধনের পথও আর নেই। একদিনের জন্তেও ধাকে মনে भट्न ভারতীর চোখ দিয়া পুনরায় জল গড়াইয়া পড়িল। তাড়াতাড়ি হাত দিয়া মুছিয়া ফেলিয়। হাসিবার চেষ্টা করিয়া বলিল, দাদা, ফেরবার সময় হয়নি । ভাটার দেরি কত ? . ডাক্তার দেওয়ালের ঘড়ির দিকে চাহিয়া বলিলেন, এখনো দেরি আছে বোন । তাহার পরে ধীরে ধীরে ডান হাত বাড়াইয়া ভারতীর মাথার উপরে রাখিয়া কছিলেন, আশ্চৰ্য্য ! এত দুর্দশাতেও এ অমূল্য রত্নটি আজও বাঙলার ধোয়া যায়নি। থাক না নবতারা, তবু ত ভারতীও আমাদের আছে। শশী, সমস্ত পৃথিবীতে এর আর জোড়া মেলে না! এমন সহস্ৰ সব্যসাচীরও সাধ্য নেই তুচ্ছ অপূৰ্ব্বকে আড়াল করে দাড়ায়। ভাল কথা শশী, মদের বোতল কই ? প্রশ্ন গুনিয়া শশী যেন কিছু লজ্জিত হইল, কিনিনি ডাক্তার। ও আমি আর शiट्वi न1 ।। ভারতী বলিল, তোমার মনে নেই দাদা, নবতারা ওকে প্রতিজ্ঞ করিয়ে নিয়েছিলেন ? শশী তাহারই সায় দিয়া কহিল, সত্যিই নবতারার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম মদ আর খাবো না । এ সত্য আমি ভাঙবো না ডাক্তার। ডাক্তার সহাস্তে বলিলেন, কিন্তু বাচবে কি করে শশী ? মদ গেল, নবতারা গেল, যথাসৰ্ব্বস্ব-বিক্রি-কর। টাকা গেল, একসঙ্গে এত সইবে কেন ? শণীর মুখের দিকে চাহিয়া ভারতী ব্যথা পাইল, কহিল, তামাসা করা সহজ দাদা, কিন্তু সত্যি সত্যি একবার ভেবে দেখ দিকি ? ডাক্তার বলিলেন, ভেবে দেখেই ত বলচি ভারতী ! এই টাকাটার উপরে ষে শণীর কতখানি আশা-ভরসা ছিল তা আমার চেয়ে বেশী আর কেউ জানে না। ওর পরিচিত এমন একটা লোকও নেই যে, এ বিবরণ শোনেনি । তার পরে এলো নবতারা । ছ-সাতমাস ধরে সেই ছিল ওর ধ্যান-জ্ঞান। আর মদ । সে তো শশীর মুখ-দুঃখে একমাত্র সাথী। কাল সবই ছিল, আজ ওর জীবনের ষা-কিছু আনন্দ, বা কিছু সানা একদিনে একসঙ্গে যড়যন্ত্র করে যেন ওকে ত্যাগ করে গেল। গুৰু কারও বিরুদ্ধে ওর বিদ্বেষ নেই—নালিশ নেই,—এমন কি আকাশের পানে চেয়ে
- C.
