পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ হয়ত বা তোমাকেও কিছু ভাগ নিতে হবে ;–কিন্তু আমার স্বৰ্গীয় গুরুদেব বলতেন, মুরারী, সত্য-পালনের দুঃখ আছে, তাকে আঘাতের মধ্যে দিয়ে বরঞ্চ একদিন পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু বঞ্চনা-প্রতারণার মিষ্ট পথ দিয়ে সে কোনদিন আনাগোনা করে না । এই ভাল, যে আমি না খেয়েই চলে গেলাম বোন । এই লইয়া করুণাময়ীর অনেকদিন অনেক দুঃখ গিয়াছে; কিন্তু কোনদিন দাদাকে তিনি দোষ দেন নাই! সেই কথা স্মরণ করিয়া অপূৰ্ব্ব মনে মনে বার বার কহিতে লাগিল,— এ ভালই হয়েচে,—তেওয়ারী ঠিক কাজই করেচে। 蠟 "L অপূৰ্ব্বর ইচ্ছা ছিল সকালে বাজারটা একবার ঘুরিয়া আসে। ইহার মেচ্ছাচারের দুর্নাম ত সমূদ্র পার হইয় তাহার কানে পৰ্য্যন্ত গিয়া পৌঁছিয়াছে ; অতএব তাহাকে অস্বীকার করা চলে না,–মানিয়া লইতেই হইবে । কিন্তু হিন্দুত্বের ধ্বজা বহিয়া সেই ত প্রথম কালাপানি পার হইয়া আসে নাই –সত্যকার হিন্দু আরও ত থাকিতে পারেন র্যাহারা চাকরির প্রয়োজন ও শাস্ত্রের অনুশাসন দুয়ের মাঝামাঝি একটা পথ ইতিপূৰ্ব্বেই আবিষ্কার করিয়া ধৰ্ম্ম ও অর্থের বিরোধ ভঞ্জন করত: মুখে বসবাস করিতেছেন। সেই স্বগম পথের সন্ধান লইতে ইহাদের সহিত পরিচিত হওয়া অত্যাবগুক, এবং বিদেশে ঘনিষ্ঠ হইয়া উঠিবার এত বড় সুযোগ বাজার ছাড়া আর কোথায় মিলিবে ? বস্তুতঃ নিজের কানে শুনিয়া ও চোখে দেখিয়া এই জিনিসটাই তাহার স্থির করা প্রয়োজন যে, জননীর বিরুদ্ধাচারী না হইয়া এ দেশে বাস্তবিক বাস করা চলে কি না । কিন্তু বাহির হইতে পারিল না, কারণ, উপরের সাহেবটা যে কখন ক্ষমা-প্রার্থনা করিতে আসিবে তাহার ঠিকানা নাই। সে যে আসিবেই তাঁহাতে সন্দেহ ছিল না । একে ত, উৎপাত সে সজ্ঞানে করে নাই, এবং আজ যখন তাহার নেশা ছুটিবে, তখন স্ত্রী ও কস্তা তাহাকে কিছুতেই অব্যাহতি দিবে না, তাহদের মুখের এই অমুচ্চারিত ইঙ্গিত সে গতকল্যই আদায় করিয়া আসিয়াছে। মেয়েটিকে আজ ঘুম ভাঙিয়া পৰ্য্যন্ত অনেকবার মনে পড়িয়াছে। ঘুমের মধ্যেও যেন তাহার ভদ্রত, তাহার সোঁজপ্ত, তাহার বিনয়নক্স কণ্ঠস্বর কানে কানে একটা জান-মুখের রেশের মত জানাগোনা করিয়া গেছে। মাতাল পিতার দ্বরাচারে ওই মেয়েটিরও যেমন লজ্জার অবধি ছিল না, মূৰ্খ >br