अंग्रं९-जांझिङ7-नर6यंह ইহাদের বৈঠক বসিল; এবং অল্পকালের বাদামুবাদেই সমস্ত স্থির হইয়া গেল। আজ চক্ৰবৰ্ত্তীর তলব হইয়াছিল। তাহাকে বিদায় দিবার পূৰ্ব্বে সমস্ত কাগজপত্র নিমাই তন্ন তন্ন করিয়া বুঝিয়া লইতে লাগিলেন। একান্ত পীড়িত ও উদভ্ৰান্ত চিত্তে সে বেচারা না পারে সব কথার জবাব দিতে, না পারে ঠিকমত হিসাব বুঝাইতে । ক্রমাগতই সে থমক খাইতেছিল এবং বাপ-ব্যাটার কড়া জেরার চোটে, সে যে একজন পাকা চোর ইহাই নিজেকে প্রতিপন্ন করিতেছিল। নিমাই কহিলেন, আমি ছিলাম না, তাই অনেক টাকাই তুমি আমার খেয়েচ, কিন্তু আর না, যাও তোমাকে জবাব দিলুম। চক্ৰবৰ্ত্তীর দু চোখ দিয়া জল গড়াইয়া পড়িল ; কহিল, বাৰু, আমি আজকের চাকর নই, কৰ্ত্তামশাই আমাকে জানতেন । গোকুল ঘাড় হেঁট করিয়া রহিল। রায় মহাশয়ের কনিষ্ঠ পুত্র মুখ খি চাইয়া কহিল, তোমার কৰ্ত্তামশায়ের মত কি বাবাকে গরু পেয়েচ, হাঁ ? আর মায়া বাড়াতে হবে না, সরে পড় । এই নাবালক খালকের একান্ত অভদ্র তিরস্কারে ব্যথিত হইয়া চক্ৰবৰ্ত্তী চোখ মুছিয়া ফেলিল এবং ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া গোকুলকে উদ্দেশ করিয়া কহিল, বাবু, আমার চার মাসের মাইনে— গোকুল তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিল, সে ত আছেই চকোক্তিমশাই, আরও যদি— কথাটা শেষ হইল না। নিমাই ডান হাত প্রসারিত করিয়া গোকুলকে থামাইয়া দিয়া জলদগম্ভীর-স্বরে কহিলেন, তুমি থাম না বাবাজী ! চক্রবর্তীকে কহিলেন, বাৰু উনি নয়, বাৰু আমি । আমি যা করব, তাই হবে। মাইনে তুমি পাবে না। তোমাকে যে জেলে দিচ্চিনে, এই তোমার বাপের ভাগ্যি বলে মানে । চক্ৰবৰ্ত্তী দ্বিরুক্তি না করিয়া উঠিয়া গেল । মনোরম এতক্ষণ কথা কহিতে না পাইয়া ফুলিতেছিল । সে যাইবামাত্রই মুখখানি গম্ভীর করিয়া স্বামীকে লক্ষ্য করিয়া কণ্ঠস্বরে আবদার মাখাইয়া দিয়া ফিস ফিস্ করিয়া কহিল, ফের যদি তুমি বাবার কথায় কথ। কবে—আমি হয় গলার দড়ি দিয়ে মরব, না হয় সবাইকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাব । গোকুল জবাব দিল না, নতমুখে নিঃশব্দে বসিয়া রহিল। পিতা ও ভ্রাতার সম্মুখে স্বামীর এই একান্ত বাধ্যতায় মুখে গৰ্ব্বে গলিয়া গিয়া মনোরম আধ-আধ স্বরে কহিল, আচ্ছ। বাবা, আমাদের নন্দদুলালকে কেন দোকানের একটা কাজে লাগিয়ে দাও না ? > 3 >
পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১৫০
অবয়ব