শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ প্রতিবাদে গগন রাগ করিয়া বলিয়াছিল, তুই কি বাপ-পিতামহের নাম ডোবাতে চাস । অল্পরাধ জবাব দিয়াছিল, তুমি তাদের বংশধর, নাম বজায় রাখতে পার রেখে, আমি পারব না । এ-কথার বেদন বিজয় বুঝিল না, নিজেও সে যে কৌলিন্ত-সন্মান এতটুকু বিশ্বাস করে তাও না, কিন্তু তবুও তাহার সহানুভূতি গিয়া পড়িল গগনের পরে এবং অনুরাধার তীক্ষ প্রত্যুত্তর যতই সে মনে মনে তোলাপাড়া করিতে লাগিল ততই তাহাকে লজ্জাহীন, লোতী ও হীন বলিয়া মনে হইতে লাগিল । এদিকে উঠানে ক্রমশ: লোক জমিতেছে, এইবায় তাহাদিগকে লইয়া কাজ শুরু করিতে হইবে, কিন্তু আজ তাঁহার কিছুই ভাল লাগিল না। দরওয়ানকে দিয়া তাহাদের বিদায় করিয়া দিল এবং একাকী বসিয়া থাকিতে না পারিয়া কি ভাবিয়া সে একেবারে বাটীর মধ্য আসিয়া উপস্থিত হইল। রান্নাঘরের সন্মুখেই খোলা বারান্দায় মাছুর পাতিয়া অনুরাধা শুইয়া, তাছার দুইপাশে দুই ছেলে কুমার ও সন্তোষ—মহাভারতের গল্প চলিতেছে। রাত্রের রান্নাটা ৰেল-বেলি সারিয়া লইয়া নিত্যই সে এমনি ছেলেদের লইয়া সন্ধ্যাৱ পরে গল্প করে, তারপরে কুমারকে খাওয়াইয়া বাইরে তাহার পিতার কাছে পাঠাইয়া জেয় । জ্যোৎস্না রাত্রি, ঘনপল্লব আমগাছের পাতার ফঁাক দিয়া আসিয়া টুকরা চাদের আলো স্থানে স্থানে তাহাদের গায়ের পরে, মুখের পরে পড়িয়াছে। গাছের ছায়ায় একটা লোককে এদিকে আসিতে দেখিয়া জয়রাধী চকিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, কে ? আমি বিজয় । তিনজনেই শশব্যস্তে উঠিয়া বসিল । সন্তোষ ছোটবাবুকে অত্যন্ত ভয় করে, প্রথম দিনের স্মৃতি সে ভুলে নাই, উসখুস করিয়া উঠিয়া গেল, কুমায়ও বন্ধুর অগুসরণ করিল। বিজয় বলিল, ত্রিলোচন গাণ্ড লীকে আপনি চেনেন? আজ তিনি আমার কাছে এসেছিলেন । r অনুরাধা বিস্থিত হইল,—অjপনার কাtছ ? কিন্তু আপনি ত তার খাতক নন। না। কিন্তু হলে হয়ত আপনার স্থবিধে হ’ত, আমার একদিনের অত্যাচার আপনি আর একদিন শোধ দিতে পারতেন । অনুরাধা চুপ করিয়া রহিল। বিজয় বলিল, তিনি জানিয়ে গেলেন, আপনার সঙ্গে তার বিবাহ স্থির হয়েচে । এ কি সত্য ? - t Șv •
পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১৯০
অবয়ব