ইরিলক্ষ্মী চুড়ি ছাড়া আর কোন অলঙ্কার নাই, পরণে ঈষৎ মলিন একখানি রাঙা-পাড়ের ধুতি, বোধ হয় তাহার স্বামীর হইবে, পল্লীগ্রামের প্রথামত ছেলেটি দিগম্বর নয়, তাহারও কোমরে একখানি শিউলিফুলে ছোপানো ছোট কাপড় জড়ানো । লক্ষ্মী তাহার হাতখানি টানিয়া লইয়া আস্তে আস্তে বলিল, ভাগ্যে জর হয়েছিল, তাই ত আপনার দেখা পেলুম। কিন্তু সম্পর্কে আমি বড় জা হই মেজবে। শুনেচি মেজঠাকুরপো এর চেয়ে ঢের ছোট । মেজবে হাসিমুখে কহিল, সম্পর্কে ছোট হলে, কি তাকে আপনি বলে ? লক্ষ্মী কহিল, প্রথম দিন এই যা বললুম, নইলে আপনি বলার লোক আমি নই। কিন্তু তাই বলে তুমিও যেন আমাকে দিদি বলে ডেকো না-ও আমি সইতে পারব না । আমার নাম লক্ষ্মী । 岑 মেজবৌ কহিল, নামটি বলে দিতে হয় না দিদি, আপনাকে দেখলেই জানা যায়। আর আমার নাম—কি জানি, কে যে ঠাট্টা করে কমলা রেখেছিলেন—এই বলিয়া সে সকৌতুকে একটুখানি হাসিল মাত্র। Աբ হরিলক্ষ্মী ইচ্ছা করিল, সেও প্রতিবাদ করিয়া বলে, তোমার পানে তাকালেও তোমার নামটি বুঝা যায়, কিন্তু অমুকুতির মত শুনাইবার ভয়ে বলিতে পারিল না। কহিল, আমাদের নামের মানে এক । কিন্তু মেজবোঁ, আমি তোমাকে তুমি বলতে পারলুম, তুমি পারলে না । মেজবোঁ সহাতে জবাব দিল, হঠাৎ না-ই পারলুম দিদি। এক বয়স ছাড়া জাপনি সকল বিষয়েই আমার বড় । যাক না দু’দিন -দরকার হলে বদলে নিতে কতক্ষণ ? হরিলক্ষ্মীর মুখে সহসা ইহার প্রত্যুত্তর যোগাইল না, কিন্তু সে মনে মনে বুঝিল, এই মেয়েটি প্রথম দিনের পরিচয়টিকে মাখামাখিতে পরিণত করিতে চাহে না । কিন্তু কিছু একটা বলিবার পূৰ্ব্বেই মেজবোঁ উঠিবাৰ উপক্ৰম করিয়া কহিল, এখন তা হলে উঠি দিদি, কাল আবার— লক্ষ্মী বিস্ময়াপন্ন হইয়া বলিল, এখনই যাবে কি-রকম, একটু বসে ! মেজবে কহিল, আপনি হুকুম করলে তো বলতেই হবে, কিন্তু আজ যাই দিদি, ওঁর আসবার সময় হ'লো। এই বলিয়া সে উঠিয়া দাড়াইল এবং ছেলের হাত ধরিয়া যাইবার পূৰ্ব্বে সহাস্তবদনে কহিল, আলি দিদি। কাল একটু সকালসকাল আসব, কেমন ? বলিয়া ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল । বিপিনের স্ত্রী চলিয়া গেলে হরিলক্ষ্মী সেইদিকে চাহিয়া চুপ করিয়া পড়িয়া রহিল। এখন জর ছিল না, কিন্তু মানি ছিল । তথাপি কিছুক্ষণের জন্য সমস্ত সে ভুলিয়। 는 5 Αη-λθω
পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২১১
অবয়ব