পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जउँौ ধীরে ধীরে কথা কহিতেছিল। বিধবার কি একটা অসংলগ্ন প্রশ্নে হরিশ হালিয়া ফেলিয়া জবাব দিবার চেষ্টা করিতেই পাশের ঘরে পর্দার আড়াল হইতে অকস্মাৎ তীক্ষু-কণ্ঠের শব্দ আসিল, আমি সব শুনেচি । বিধবা চমকিয়া উঠিল। হরিশ লজ্জা ও শঙ্কায় কাঠ হইয়া গেল। একজোড়া অতি সতর্ক চক্ষু কৰ্ণ যে তাহাকে অহরহ পাহারা দিয়া আছে, এ-কথা সে মুহূৰ্ত্তের জন্য ভুলিয়াছিল। পর্দা ঠেলিয়া নিৰ্ম্মলা রণমূৰ্ত্তিতে বাহির হইয়া আসিল, হাত নাড়িয়া কণ্ঠস্বরে বিষ ঢালিয়া দিয়া কহিল, ফুল ফুস করে কথা কয়ে আমাকে ফাকি দেবে ? মনেও ক'রো না ! কই, আমার সঙ্গে ত কখনো এমন হেসে কথা কইতে দেখিনি ! অভিযোগ নিতান্ত মিথ্যা নয় । বিধবা সভয়ে কহিল, এ কি কাও হরিশবাবু! হরিশ বিমূঢ়ের মত ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া বলিল, পাগল । নিৰ্ম্মলা কহিল, পাগল ? পাগলই বটে ! কিন্তু করলে কে শুনি ? বলিয়া সে হাউ হাউ করিয়া কাদিয়া ফেলিয়া সহসা হাটু গড়িয়া বিধবার পায়ের কাছে টিপ চিপ, করিয়া মাথা খুড়িতে লাগিল। মুহুরি কাজ ফেলিয়া ছুটিয়া আসিল, একজন জুনিয়ার উকিল সেইমাত্র আসিয়াছিল, সে আসিয়া দ্বারের কাছে দাড়াইল, বোস কোম্পানীর বিল-সরকার তাহারই কাধের উপর দিয়া উকি মারিতে লাগিল, এবং তাহদেরই চোখের সম্মুখে নিৰ্ম্মলা মাথা খুঁড়িতে লাগিল—আমি সব জানি ! আমি সব বুঝি ! থাকে, তোমরাই মুখে থাকে । কিন্তু সতী মায়ের সতী কন্যা যদি হই, যদি মনে-জ্ঞানে এক राई न छूझे ८खट्न थांकि ; मुनि এদিকে বিধবা নিজেও কাদিয়া ফেলিয়া বলিতে লাগিল, এ কি ব্যাপার হরিশবাৰু! এ কি দুর্নাম দেওয়া—এ কি আমার হরিশ কাহারও কোন প্রতিবাদ করিল না। অধোমুখে দাড়াইয়া শুধু তাহার মনে হইতে লাগিল, পৃথিবী দ্বিধা হও না কিসের জন্য ? লজ্জায় ঘৃণায় ক্রোধে সেদিন হরিশ সেই ঘরেই স্তব্ধ হইয়া রহিল, আদালতে বাহির হইবার কথা ভাবিতেও পারিল না। মধ্যাহ্নে উমা আসিয়া বহু সাধ্য-সাধনা এবং মাথার দিব্য দিয়া কিছু খাওয়াইয়া গেল। সন্ধ্যার প্রাক্কালে বামুনঠাকুর রূপার বাটিতে করিয়া খানিকটা জল আনিয়া পায়ের কাছে রাখিল। হরিশের প্রথমে ইচ্ছা হইল লাথি মারিয়া ফেলিয়া দেয়, কিন্তু আত্মসংবরণ করিয়া আজও পায়ের বুড়া আঙ্গুলটা ডুবাইয়া দিল। স্বামীর পাদোদক পান না করিয়া নিৰ্ম্মলা কোনদিন জল-ম্পর্শ করিত না। २३१