[এককড়ি ব্যাকুল হইয়া আবার কি বলিতে গেল, কিন্তু রুদ্ধদ্ধারে পুনঃ পুন: করাঘাতের শব্দ শুনিয়া বিবর্ণ-মুখে থামিয়া গেল।]
জীবানন্দ । ( সাড়া দিয়া ) গোলা আছে, ভিতরে আসুন ।
[ দরজা উন্মুক্ত হইল। ম্যাজিস্ট্রেট, ইনস্পেক্টর, কয়েকজন কনেস্টবল ও তারাদাস চক্রবর্তী প্রবেশ করিলেন । ]
তারাদাস। ( ভিতরে ঢুকিয়াই কাঁদিয়া ) ধর্ণাবতার, হুজুর! এই আমার মেয়ে, মা-চণ্ডীর ভৈরবী । আপনার দয়া না হলে আজ ওকে টাকার জন্যে খুন করে ফেলত ধৰ্ম্মাবতার।
ম্যাজিস্ট্রেট্ ! ( ষোড়শীর আপাদ-মস্তক নিরীক্ষণ করিয়া ) তোমারই নাম ষোড়শী ? তোমাকে বাড়ি থেকে ধরে এনে উনি বন্ধ করে রেখেচেন ?
ষোড়শী । ( মাথা নাড়িয়া ) না, আমি নিজের ইচ্ছায় এসেচি। কেউ আমার গায়ে হাত দেয়নি ।
তারাদাস । ( চেঁচামেচি করিয়া উঠিল ) না হুজুর, ভয়ানক মিথ্যে কথা, গ্রামসুদ্ধু সাক্ষী আছে । মা আমার রাঁধছিল, আটজন পাইক গিয়ে মাকে বাড়ি থেকে মারতে মারতে টেনে এনেচে ।
ম্যাজিস্ট্রেট । ( জীবানন্দের প্রতি কটাক্ষে চাহিয়া ষোড়শীকে কহিলেন ) তোমার কোন ভয় নেই, তুমি সত্য কথা বল। তোমাকে বাড়ি থেকে ধরে এনেচে ?
ষোড়শী । না, আমি আপনি এসেচি।
ম্যাজিস্ট্রেট । এখানে তোমার কি প্রয়োজন ?
ষোড়শী । আমার কাজ ছিল ।
ম্যাজিস্ট্রেট। এত রাত্রেও বাড়ি ফিরে যেতে দেরি হচ্ছিল ।
তারাদাস । ( চেঁচাইয়া ) না হুজুর, সমস্ত মিছে—সমস্ত বানানো, আগাগোড়া শিখানো কথা ।
ম্যাজিস্ট্রেট । (তাহার প্রতি লক্ষ্য না করিয়া শুধু মুখ টিপিয়া হাসিলেন এবং শিস দিতে দিতে প্রথমে বন্দুকটা এবং পরে পিস্তলটা তুলিয়া লইয়া জীবানন্দকে কেবল বলিলেন) I hope you have permission for this.
ম্যাজিস্ট্রেট । ( নেপথ্যে) হামারা ঘোড়া লাও !