শিক্ষাত্র বিল্লোপ্ৰ এতদিন এদেশে শিক্ষার ধারা একটা নির্বিবন্ধ নিরূপ জব পথে চলে আসছিল। সেটা ভাল কি মন্দ এ-বিষয়ে কারও কোন উদ্বেগ ছিল না। আমার বাবা ষা পড়ে গেছেন, তা আমিও পড়ব। এর থেকে তিনি যখন দু’পয়সা করে গেছেন, সাহেবস্ববোর দরবারে চেয়ারে বসতে পেয়েছেন, স্থাগুশেকু করতে পেয়েছেন, তখন আমিই বা কেন না পারব ? মোটামুটি এই ছিল দেশের চিন্তার পদ্ধতি। হঠাৎ একটা ভীষণ ঝড় এল। কিছুদিন ধরে সমস্ত শিক্ষা-ৰিধানটাই বনিয়াদ-সমেত এমনি টলমল করতে লাগল যে, একদল বললেন পড়ে যাবে। অন্যদল সভয়ে মাথা নেড়ে বললেন, না, ভয় নেই—পড়বে না। পড়লও না! এই নিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা কটু কথায় জজরিত করে দিলেন। তারা হেতু ছিল। মাছুষের শক্তি ষত কমে আসে মুখের বিষ তত উগ্র হয়ে ওঠে । বাইরে গাল তার ঢের দিলেন, কিন্তু অস্তরে ভরসা বিশেষ পেলেন না । ভয় তাদের মনের মধ্যেই রয়ে গেল, দৈবাৎ বাতাসে যদি আবার কোনদিন জোর ধরে ত এই গোড়ী-হেলা নড়বড়ে অতিকায়ট হুমড়ি খেয়ে পড়তে মুহূৰ্ত্ত বিলম্ব করবে না। এমনি যখন অবস্থা তখন ঐযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিলেত থেকে ফিরে এলেন, এবং পূর্ব ও পশ্চিমের শিক্ষার মিলন সম্বন্ধে উপৰ্য্যুপরি কয়েকটি বক্তৃতায় তার মতামত ব্যক্ত করলেন । রবীন্দ্রনাথ আমার গুরুতুল্য পূজনীয়। স্বতরাং মতভেদ থাকলেও প্রকাশ করা কঠিন। কেবল ভয় হয় পাছে অজ্ঞাতসারে তার সম্মানে কোথাও লেশমাত্র আঘাত করে বসি । কিন্তু এ তো কেবলমাত্র ব্যক্তিগত মতামতের আলোচনা নয়,—ষা তারও বৰপূজ্য,—সেই দেশের সঙ্গে এ বিজড়িত। তার কথা নিয়ে কয়েকটা AngloIndian কাগজ একেবারে উল্লসিত হয়ে উঠেছে। থেকে থেকে তাদের প্যাচালো উপদেশের আর বিরাম নেই। আর কিছু না হোক দেশের হিতাকাজায় এদের যখন বুক ফাটতে থাকে তখনি ভয় হয়, ভেতরে কোথাও একটা বড় রকমের গলদ আছে । বিশেষ করে বাঙ্গালী-পরিচালিত Anglo-Indian একখানা কাগজ। এর মুখের ত আর কামাই নেই। নিজের বুদ্ধি দিয়ে কবির কথাগুলো বিকৃত বিধ্বস্ত করে অবিশ্রাম বলছে—আমরা বলে বলে গল ভেঙ্গে ফেলেছি,—ফল হয়নি,—এখন রবিবাবু এসে রক্ষে করে দিলেন । যথা— \oetr
পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৩১৮
অবয়ব