শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ৰলিয়াছ—স্বাধীনতার জন্য বুকের জাল কি, তাহা তোমাকেই সকল সংশয়ের অতীত করিয়া বুঝাইয়া দিতে হইল। বুঝাইয়া দিতে হইল,-“নান্ত পন্থা বিস্ততে অয়নায়”। এই ত তোমার ব্যথা ! এই ত তোমার দান ! ছলনা তুমি জান না, মিথ্যা তুমি বল না, নিজের তরে কোথাও কিছু লুকাইতে তুমি পার না—তাই, বাংলা তোমাকে যখন বন্ধু বলিয়া জালিঙ্গন করিল, তখন সে ভুল করিল না, তাহার নিঃসঙ্কোচ নির্ভরতায় কোথাও লেশমাত্র দ্বাগ লাগিল না। আপনার বলিয়া, স্বাৰ্থ বলিয়া কিছু তোমার নাই, সমস্ত স্বদেশ তাই ত আজ তোমার করতলে । তাই ত, তোমার ত্যাগ আজ শুধু তোমার নয়, আমাদের । গুৰু বাঙ্গালীকে নয়, তোমার প্রায়শ্চিত্ত আজ বিহারী, পাঞ্জাবী, মারহাট, গুজরাট যে যেখানে আছে, সকলকে নিষ্পাপ করিয়াছে । তোমার দান আমাদের জাতীয় সম্পত্তি,—এ ঐশ্বৰ্য্য বিশ্বের তাণ্ডারে আজ সমস্ত মানবজাতির জন্য অক্ষয় হইয়া রহিল। এমনি করিয়াই মানবজীবনের দেনা-পাওনার পরিশোধ হয়, এমনি করিয়াই যুগে যুগে মানবাত্মা পশুশক্তি অতিক্ৰম করিয়া চলে। একদিন নশ্বর দেহ তোমার পঞ্চভূতে মিলাইবে। কিন্তু যতদিন সংসারে অধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে ধৰ্ম্মের, সবলের বিরুদ্ধে দুৰ্ব্বলের, অধীনতার বিরুদ্ধে মুক্তির বিরোধ শাস্ত হইয়া না আসিবে, ততদিন অবমানিত, উপদ্রুত মানবজাতি সৰ্ব্বদেশে, সৰ্ব্বকালে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তোমার এই সুকঠোর প্রতিবাদ মাথায় করিয়া বহিবে এবং কোনমতে কেবলমাত্র বাচিয়া থাকাটা যে অমুক্ষণ শুধু বাচাকেই ধিক্কার দেওয়া, এ সত্য কোনদিন বিশ্বত হইতে পারিবে না । জীবনতত্ত্বের এই অমোঘ বাণী স্বদেশে, বিদেশে, দিকে দিকে উদ্ভাসিত করিবার গুরুভার বিধাতা স্বহস্তে যাহাকে অর্পণ করিয়াছেন, তাহার কারাবসানের তুচ্ছতাকে উপলক্ষ স্থষ্টি করিয়া আমরা উল্লাস করিতে আসি নাই। হে চিত্তরঞ্জন, তুমি আমাদের ভাই, তুমি আমাদের মুহৃদ, তুমি আমাদের প্রিয়,—অনেকদিন পরে তোমাকে কাছে পাইয়াছি। তোমার সকল গৰ্ব্বের বড় গৰ্ব্ব-বাঙ্গালী তুমি ; তাই ত সমস্ত বাঙ্গলার হৃদয় তোমার কাছে আজ বহিয়া আনিয়াছে,--আর আনিয়াছি, বঙ্গজননীর একান্ত মনের আশীৰ্ব্বাদ,—তুমি চিরজীবী হও । তুমি জয়যুক্ত হও।* তোমার গুণমুগ্ধ স্বদেশবাসিগণ। বঙ্গাৰো দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের কারামুক্তি হইলে শ্রদ্ধানন্দ পার্কে অনুষ্ঠিত সভার بدهد . " দেশবাসীর পক্ষ হইতে র্তাহাকে প্রদত্ত:অভিনন্দন । t see
পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৩৪০
অবয়ব