শিরোমণি। (সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়াইয়া উঠিয়া) না তারাদাস, থাক। ওর কথা আপনার মেয়ে হয়ত বিশ্বাস করবে না রায়মশাই। ও-ই বলুক। চণ্ডীর দিকে মুখ করে ও-ই নিজের মায়ের কথা নিজে বলে যাক। কি বল চাটুয্যে? তুমি কি বল হে যোগেন ভট্টচায? কেমন? ও-ই নিজে বলুক।
হৈম। আপনার। ওঁর বিচার করতে চান নিজেরাই করুন, কিন্তু ওঁর মায়ের কথা ওঁর নিজের মুখ দিয়ে কবুল করিয়া নেবেন, অতবড় অন্যায় আমি কোনমতে হতে দেব না। (ষোড়শীর প্রতি) চলুন আপনি আমার সঙ্গে মন্দিরের মধ্যে—
ষোড়শী। না বোন, আমি পুজো করিনে, যিনি এ-কাজ নিত্য করেন তিনিই করুন, আমি কেবল এইখানে দাড়িয়ে তোমার ছেলেকে আশীর্ব্বাদ করি, সে যেন দীর্ঘজীবী হয়, নীরোগ হয়, মানুষ হয়! (পূজারীর প্রতি) কিন্তু-ছোটঠাকুরমশাই, তুমি ইতস্তত: করচ কিসের জন্য? আমার আদেশ রইল দেবীর পূজা যথারীতি সেরে তুমি নিজের প্রাপ্য নিয়ো। বাকী মন্দিরের ভাঁড়ারে বন্ধ করে চাবি আমাকে পাঠিয়ে দিয়ে। (হৈমের প্রতি) আমি আবার আশীর্ব্বাদ করে যাচ্ছি, এতেই তোমার ছেলের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ হবে।
জনার্দ্দন। (নির্ম্মল ও হৈমর প্রতি) যাও মা, তোমরাও পূজারী ঠাকুরের সঙ্গে যাও—পূজোটি যাতে স্বসম্পন্ন হয় দেখো গে।
জনার্দ্দন। যাক বাঁচা গেছে শিরোমণিমশায়, ষোড়শী আপনিই চলে গেল। ছড়ি জিদ করে যে আমার নাতির মানস-পূজাটি পণ্ড করে দিলে না এই ঢের।
শিরোমণি। এ যে হতেই হবে ভায়া, মা মহামায়ার মায়া কি কেউ রোধ করতে পারে? এ যে ওঁরই ইচ্ছে। (এই বলিয়া তিনি যুক্তকরে মন্দিরের উদ্দেশে প্রণাম করিলেন।)
যোগেন ভটচায। (গলা বাড়াইয়া দেখিয়া) অ্যাঁ এ যে স্বয়ং হুজুর আসচেন।
শিরোমণি ও জনার্দ্দন। আসুন, আসুন, আসুন।