প্রভৃতির হাতে দেবীর সমস্ত অস্থাবর সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়ে আমার গোমস্তার হাতে সিন্দুকের চাবি দেবে। এ-বিষয়ে তোমার কিছু বলবার আছে?
ষোড়শী। আমার বক্তব্যে আপনার কি কিছু প্রয়োজন আছে?
জীবানন্দ। না, নেই। তবে আজ সন্ধ্যার পরে এইখানেই একটা সভা হবে? ইচ্ছে কর ত দশের সামনে তোমার দুঃখ জানাতে পার। ভাল কথা, শুনতে পেলাম আমার বিরুদ্ধে প্রজাদের না-কি তুমি বিদ্রোহী করে তোলবার চেষ্টা করচ?
ষোড়শী। তা জানিনে। তবে, আমার নিজের প্রজাদের আপনার উপদ্রব থেকে বাঁচবার চেষ্টা করচি।
জীবানন্দ। (অধর দংশন করিয়া) পারবে?
ষোড়শী | পারা না-পারা মা-চণ্ডীর হাতে।
জীবানন্দ। তারা মরবে।
ষোড়শী। মানুষ অমর নয় সে তারা জানে।
জীবানন্দ। (একমুহূর্ত্ত স্তব্ধ থাকিয়া) তোমার নিজের প্রজা আর কেউ নেই। তারা যার প্রজা তিনি নিজে দস্তখত করে দিয়েচেন। তাঁকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।
ষোড়শী। (মুখ তুলিয়া) আপনার আর কোন হুকুম আছে? নেই? তা হলে দয়া করে এইবার আমার কথাটা শুনুন।
জীবানন্দ। বল।
ষোড়শী। আজ দেবীর অস্থাবর সম্পত্তি বুঝিয়ে দেবার সময় আমার নেই, এবং সন্ধ্যায় মন্দিরের কোথাও সভা-সমিতির স্থানও হবে না। এগুলো এখন বন্ধ রাখতে হবে।
শিরোমণি। (সহসা চীৎকার করিয়া) কখনো না! কিছুতেই নয়! এ-সব চালাকি আমাদের কাছে খাটবে না বলে দিচ্ছি—
জনার্দ্দন। (উষ্মার সহিত) তোমার সময় এবং মন্দিরের ভেতর জায়গা কেন হবে না শুনি ঠাকরুণ?
ষোড়শী। (বিনীত-কণ্ঠে) আপনি ত জানেন রায়মশাই, এখন চড়কের উৎসব। যাত্রীর ভীড়, সন্ন্যাসীর ভীড়, আমারই বা সময় কোথায়, তাদেরই বা সরাই কোথায়?