পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ চলিতে উদ্ভত হইলে বিমলবাবু বলিলেন, রান্থ, বিশেষ পরিচয় নেই দু'জনের, কিন্তু আমাকে বন্ধু বলেই জেনে । রাখাল ইহারও জবাব দিল না, ধীরে ধীরে নীচে চলিয়া গেল। কালকের মতো জাজও সিড়ির কাছে দাড়াইয়া ছিল সারদা। কাছে আসিতেই মৃদুকণ্ঠে কহিল, দেব তা ? কি চাও ভূমি ? ৰলেছিলেন অনেক সারদার মধ্যে আমিও একজন। হয়তে আপনার কথাই সত্যি। সে আমি জানি । সারদা বলিল, নানাভাবে দয়া করে আমাকে ৰাচিয়েছিলেন বলেই আমি বেঁচেছিলুম। আপনি অনেকের অনেক করেন, আমারও করেছিলেন, তাতে ক্ষতি আপনার হয়নি। বেঁচে যদি থাকি এইটুকুই কেবল জেনে রাখতে চাই। রাখাল এ প্রশ্নের উত্তর দিল না, নীরবে বাহির হইয়া গেল। ১৬ পরদিন সকালবেলায় হরিশপুর যাত্রার আয়োজন যখন সম্পূর্ণ, সবিতা সারাকে ভাকিয়া বলিলেন, তোমার বাক্স-বিছানা এইবেল। উপরে পাঠিয়ে দাও সারদা, সমস্ত মাল-পত্র তারক লিস্ট করে নিচ্চে। সারদা কুষ্ঠিত হইয়া কহিল, আমার বাক্স-বিছানা যাবে না মা। একটি নীচু টুলে বসিয়া তারক নোটবুকের পৃষ্ঠায় দ্রুতহন্তে মালপত্র ফর্দ লিখয়া লইতেছিল। সারদার উত্তর তাহার কানে পৌঁছিল। অনবত মুখ উচু করিয়া তারক বিস্মিত-স্বরে বলিল, বাক্স-বিছানা যাবে না কি-রকম ! সবিতাও বিস্থিত হইয়াছিলেন। নিম্নস্বরে বলিলেন, নেয়ার মত বাক্স-বিছানা কি তোমার নেই সারদা ? তা হলে আগে বললে না কেন, বন্দোবস্ত করতাম । স্নান হাসিয়া সারদা বলিল, বিছানা আমার পুরানো এবং ছেড়াও বটে, তা হলেও সেগুলো সঙ্গে নিতে লজ্জা ছিল না, হরিণপুরে আমার যাওয়া হবে না মা। তারক ও সবিতা প্রায় এক-সঙ্গেই বলিয়া উঠিলেন, সে কি ? সারদা শুষ্ক হাসিয়া বলিল, আমার কোথাও নড়বার উপায় নেই। নইলে মাকে সেবা করার থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে এই শূন্তপুরীতে একলা পড়ে থাকার ও আমি ভোগ করতাম না । ههج