পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় তোমার মনে বাজবে না, স্থতির দাহ জেগে উঠবে না। আমি তো বেশী কিছু জানিনে। হয়তো না জেনে আঘাত দিচ্চি তোমাকে । o: সবিতা এবারে উদগত অশ্র সংবরণ করিতে পারিলেন না, ঝর ঝর করিয়া ঝরিয়া পড়িল। তাড়াতাড়ি চোখ মুছিয়া মূখ ফিরাইয়া লইলেন। কি যেন একটা কথা বারংবার বলিবার চেষ্টা করিয়াও লজ্জায় ও দুঃখে কণ্ঠ রোধ হইয়া আসিতে লাগিল । বিমলবাবু আবার বলিলেন, কুষ্ঠিত হ’য়ে না। বলে, কি বলে ডাকলে তুমি সহজে সাড়া দিতে পারবে ? সবিতা তথাপি নিরুত্তর রইলেন। তার পরে বিপুল লঙ্কোচ প্রাণপণে ঠেলিয়া মৃদ্ধস্বরে কহিলেন, আমাকে রেণুর মা বলে ডেকো । বিমলবাবুর মুখে কোমল সহানুভূতির কারুণ্য পরিস্ফুট হইয়া উঠিল। মিঞ্চকণ্ঠে বলিলেন, সত্যি ! ভারী সুন্দর। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি এই ভেবে, তোমার এতবড় পরিচয়টা এতদিন আমার মনে হয়নি কেন বলে তো ? সবিতা চুপ করিয়া রছিলেন। বিমলবাবু আনন্দ মধুর-কণ্ঠে বলিতে লাগিলেন, এ যে তুমি কতবড় দান আজ আমাকে দিলে, তা হয়তো তুমি নিজেও জানো না রেণুর মা ! তোমার দেওয়া এই সম্মান এই বিশ্বাসের যেন মধ্যাদা রাখতে পারি। আমার আর কোনও কামনা নেই। বিমলবাবু হয়তো আরও কিছু বলিতেন, ট্রেন ছাড়িবার সঙ্কেতস্থচক দ্বিতীয় ঘন্ট পঞ্জিয়া গেল। হাতঘড়ির পানে চাহিয়া তিনি উঠিয়া দাড়াইলেন । বলিলেন, যাই এবার। হরিণপুরে থাকতে যদি ভালো না লাগে, চলে আসতে দ্বিধা ক’রো না যেন । তারক যদি পৌঁছে দিয়ে যেতে চুটি না পায়, খবর দিও। রাষ্ট্র গিয়ে নিয়ে আসবে। প্রয়োজন হলে আমিও যেতে পারি। বিমলবাবু গাড়ি হইতে নামিয়া গেলেন। তারক ক্রতপক্ষে আসিতেছিল। হাতে এক-মাস বরফখওপূর্ণ রঙীন পানীয়। সিরাপ জিঞ্জার বা ঐরূপ কিছু। বিমলবাবুর হাতে মাসটি তুলিয়া দিয়া বলিল, নতুন-মাকে তো একফোট জলও মূখে দেওয়াতে পারলাম না। আপনি যেন এটা রিফিউজ করবেন না । ৰিমলবাবু হাসিয়া বলিলেন, দাও । মাসটি বিমলবাবুর হাতে তুলিয়া দিয়া তারক পকেট হইতে কলাপাতা-মোড়া পানের দোনা বাহির করিল। - শেষৰণ্টা পড়িয়া গার্ডের হইসেল শোনা গেল। সবিতা বলিয়া উঠিলেন, গাড়ি ৰে এখনি ছাড়ৰে তারক | উঠে এসে এইবার । তোমার এই অতিথিবৎসল্যের মধ্যে আমি ষে কি করে দিন কাটাবো তাই ভাবচি । ƉED