পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

इयेि মা-শোয়ে এই ইঙ্গিত বুঝিল। জলিয়া উঠিয়া হাত-বাক্সটা সজোরে ঠেলিয়া দিয়া বলিল, আমি সকালবেলা চুরুট খাই না-চুরুট দিয়া গদ্ধ ঢাকিবার কাজও করি নাই আমি ছোটলোকের মেয়ে নই। বা-খিন মুখ তুলিয়া শাস্ত-কণ্ঠে কহিল, হয়ত তোমার কাপড়ে কোনরূপে লাগিয়াছে, মদের গন্ধটা আমি বানাইয়া বলি নাই। মা-শোয়ে বিদ্যুদ্বেগে উঠিয়া দাড়াইল—তুমি যেমন নীচ তেমনি হিংস্থক, তাই আমাকে বিনা দোষে অপমান করিলে। আচ্ছ, তাই ভাল, আমার জাম-কাপড় তোমার ঘর হইতে আমি চিরকালের জন্তে সরাইয়া লইয়া যাইতেছি। এই বলিয়া সে প্রত্যুত্তরের অপেক্ষ না করিয়াই দ্রুতবেগে ঘর ছাড়িয়া যাইতেছিল, বা-খিন পিছনে ডাকিয়া তেমনি সংযত-স্বরে বলিল, আমাকে নীচ ও হিংসুক কেহ কখনও বলে নাই, তুমি হঠাৎ অধঃপথে যাইতে উষ্ঠত হইয়াছ বলিয়াই সাবধান করিয়াছি। মা-শোয়ে ফিরিয়া দাড়াইয়া কহিল, অধঃপথে কি করিয়া গেলাম ? তাই আমার মনে হয় । আচ্ছ, এই মন লইয়াই থাকে, কিন্তু যাহার পিতা আশীৰ্ব্বাদ রাখিয়া গিয়াছেন, সন্তানের জন্য অভিশাপ রাখিয়া যান নাই, তাহার সঙ্গে তোমার মনের মিল হইবে না। এই বলিয়া সে চলিয়া গেল, কিন্তু বা-থিন স্থির হইয়া বসিয়া রহিল। কেহ যেকোন কারণেই তাহাকে এমন মৰ্ম্মাস্তিক করিয়া বিধিতে পারে, এত ভালবাসা একদিনেই যে এতবড় বিষ হইয়া উঠিতে পারে, ইহা সে ভাবিতেও পারিত না । মা-শোয়ে বাট আসিয়াই দেখিল পো-খিন বসিয়া আছে। সে সসন্ত্রমে উঠিয়া দাড়াইয়া অত্যন্ত মধুর করিয়া একটু হাস্ত করিল। হাসি দেখিয়া মা-শোয়ের দুই ভ্ৰ বোধ করি অজ্ঞাতসারেই কুঞ্চিত হইয়া উঠিল । কহিল, আপনার কি বিশেষ প্রয়োজন আছে ? ন, প্রয়োজন এমনতা হইলে আমার সময় হইবে না, বলিয়। পাশের দিড়ি দিয়া মা-শোয়ে উপরে চলিয়া গেল । গত-নিশার কথা স্মরণ করিয়া লোকটা একেবারে হতবুদ্ধি হইয়া গেল। কিন্তু বেহাৱাটা স্বমুখে আসিতেই কাষ্ঠহাসির সঙ্গে হাতে তাহার একটা টাকা গুজিয়া দিয়া শিস দিতে দিতে বাহির হইয়া গেল । ጳሆ®