ছাত্র সাহিত্য-সম্মেলনে বক্তৃতা আজকাল যে-সমস্ত সাহিত্য-সম্মেলন হয় প্রায়ই দেখিতে পাই যে, সেই সমস্ত অনুষ্ঠানে অতি-মাধুনিক সাহিত্য-সম্বন্ধে খুবই নিম্নাবাদ হয় । আমি অতি-আধুনিক সাহিত্যের যে প্রশংসা করিতেছি তাহা নহে, আমার বক্তব্য এই যে, এই ধরণের আলোচনা না হওয়াই ভাল। কারণ, এইভাবে লেখা উচিত বা এইভাবে লেখা উচিত নহে—এ-কথা বলিলে বিশেষ কিছু লাভ হয় না। যাহার যে-রকম শিক্ষা, যাহার ষে রকম দৃষ্ট, যাহার যে-রকম শক্তি, যাহার যে-রকম রুচি—তিনি তাহারই অনুপাতে সাহিত্য গড়িয়া তুলেন। এই সমস্ত সাহিত্যের মধ্যে যেগুলি থাকিবার তাহ থাকিবে এবং যাহা না থাকিবার তাহা লোপ পাইবে । সাহিত্য গড়িয়া উঠে যুগধৰ্ম্মে-সমালোচনা অথবা সহযোগিতা দ্বারা গডিয়া উঠে না। সমস্ত জিনিসেরই একটি ক্রমোন্নতি আছে, নাই শুধু সাহিত্যের ব্যাপারে। কালিদাসের পরে শকুন্তলাকে যদি আরও ভাল করার শক্তি থাকিত, তাহা হইলে যত লোক ইহা পডিয়াছেন, যত লোক অনুকরণ করিয়াছেন, যত লোক ইহাকে ভাল বলিয়াছেন–র্তাহারা শকুন্তলা হইতে উৎকৃষ্টতর নাটক রচনা করিতে পারিতেন। কিন্তু তাছা হয় নাই। মহাকবি কালিদাস যাহা লিথিয়া গিয়াছেন তাহাই বড় হয়ে আছে। রবীন্দ্রনাথকে অনুকরণ করিয়া অনেকেই অনেক কিছু লিথিয়াছেন । কিন্তু রবীন্দ্রনাথের রচনা ও অনুকরণের মধ্যে আসমান জমি প্রভেদ | অনেকে হয়ত বলতে পারেন, নূতন সাহিত্য-সম্বন্ধে আমি বিরুদ্ধ মত পোষণ করি—কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাহা নহে । আমি কালের উপর নির্ভর করিয়া বসিয়া আছি। আমি যাহা লিখিয়াছি তাহার যদি কোন মূল্য থাকে, তবে ভবিষ্যতে তাহ টিকিয়া থাকিবে ; আর যদি টিকিবার না হয় তবে ঝরিয়া পড়িবে। মাছুষের ভাল অথবা মন লাগার উপর কোন সাহিত্যই নির্ভর করে না—সে তাহার প্রয়োজনে আপন হইতেই নামিয়া যায়, সমাজের মধ্যে জীবনের মধ্যে পরবর্তী কালে মানুষ যদি ইহাকে প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে করে, তবে তাহা আর থাকিবে না। স্বতরাং এই জাতীয় আলোচনায় কোন লাভ নাই ; তাহাতে শুধু সাহিত্যিকদিগের মধ্যে একটি রেষারেষির ভাব আসিয়া পড়ে। ক্ষমাল দিয়া সাহিত্যাষ্টি হয় না। তার চেয়ে বলা ভাল—তোমাদের শুভ-বুদ্ধির উপর নির্ভর করিয়া রছিলাম। や象〉 - »ቑማ÷ፀ »
