শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ মালিক পত্রে ও নানাভাবে অনবরত বেরুচ্ছে—গত এক বৎসর আমি সে-সকল যথেষ্ট মন দিয়ে পড়েটি। আমার সমালোচনার হয়ত বিশেষ কোন মূল্য নেই, কারণ, আমি সমালোচনা করতেই পারি না। শুধু ভাল মন্স লাগার ভিতর দিয়া আমার নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারি। আজ আমাকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, জিনিসটা সত্যই বিত্র হয়ে উঠেচে । আমি বরাবর চেয়েছিলাম, কবির যাকে রসবন্তু বলেন, এইটিই যেন তারা তাদের যৌবনের শক্তি, অভিজ্ঞতা, ইচ্ছা, প্রবৃত্তি নিয়ে সাহিত্য গড়ে তুলতে পারেন। আমি র্তাদের ভালবাসি এবং এইদিক থেকেই তাদের উৎসাহ বরাবর দিয়ে এসেচি । ধাদের বয়স হয়েচে, তাদের মন অল্প রকম হয়ে গেছে। যৌবন জিনিসটা আমরা নিজের পেরিয়ে গেছি। তাই যৌবনের অনেক রচনা হয়ত আজ পড়তেও ভাল লাগে না, লিখতেও পারি না। এইজন্য মনে করি, বয়স যাদের কম, তাদের নূতন আকাঙ্কা, ইচ্ছ, প্রবৃত্তি ও তার সঙ্গে একটা শুদ্ধ মন নিয়ে সত্য সাহিত্য র্তার রচনা করবেন ; সাহিত্যের উন্নতি করবেন ; বাঙলা ভাষায় বড় জিনিস লিখে যাবেন, আস্তরিক চেষ্টা নিয়ে সাহিত্য রচনা করবেন । কিন্তু এক বৎসরের অভিজ্ঞতার ফলে আমার মন ঠিক অন্তরকম হয়ে গেছে। আমি দেখচি, আমি যাকে রস বলে বুঝি, তাদের ভিতর তার বড় অভাব। চোখ মেলে চাইলে অভাবই দেখতে পাওয়া যায়। একটা মানুষের হৃদয়বৃত্তির যত ভাগ আছে, তার একটা ভাগ যেন তারা অনবরত পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছেন, সে যেন আর থামে না। দু-তিনজন বন্ধু দেখা করতে এসেছিলেন, তা দিগকে জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা এটা করচ কেন ? উত্তরে তারা বললেন—এইজন্য করচি, আমাদের আর scope নাই। আমরা যখন যা ভাবি, বা করি, যৌবনে যা প্রার্থনা করি, সেদিক থেকে রস-রচনা বা সাহিত্যরচনার উপযুক্ত ক্ষেত্র পাই না—এই বলে তারা দুঃখ করলেন । আমি তাদের বললাম—কেবল একট ব্যাপারে তোমরা বেদন বোধ করচ । অনেকদিনের সংস্কার, অনেকদিনের সমাজ–এতে ক্রটি-বিচূতি, অভাব-অভিযোগ অনেক থাকতে পারে। বেদনার কি আর কোন বস্তু দেখতে পাও না ? মানব-জীবন, সমভ সংসার, এতবড় পরাধীন জাতি, এ সব ত রয়েচে, এর বেদনা- কি তোমরা অনুভব কর না ? জাময় সব-চাইতে দরিদ্র, আমাদের মধ্যে শিক্ষার কত অভাব, সামাজিক ব্যাপারে কত ক্ৰটি আছে—এ সব নিয়ে তোমরা কাজ কর না কেন ? এর অভাব, বেদনা কি তোমাদের লাগে না ? এর জন্য প্রাণটা বাদে না কি ? তোমাদের লাঞ্ছস আছে, কিন্তু সাহস কেবল একদিকে হলে চলবে না । যেটাকে তোমরা সাৰূপ মনে করচ, আমি মনে করি সেটা সাহসের অভাব । এদিকে ত শাস্তির ভর নাই, কেহ তোমাদের বিশেষ কিছু করতে পারবে না । ষেদিকে শাস্তির ভয় আছে, 9יאלץ