পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় জাসবো বই কি বাবা । এই বলিয়া তিনি অগ্রসর হইলেন, পিছনে চলিল রাখাল । পথে আসিতে গাড়ির মধ্যে সবিতা আজিকার সমস্ত কথা, সমস্ত ঘটনা মনে মনে আলোচনা করিতেছিলেন। তাহার তেরো বৎসর পূৰ্ব্বেকার জীবন যা-কিছুর সঙ্গে গাথা ছিল, আজ আবার তাহাদের মাঝখানেই তাহার দিন কাটিল । স্বামী, কন্যা, রাখাল-রাজ এবং কুলদেবতা গোবিন্দ-জীউ । গৃহত্যাগের পর হইতে অমুক্ষণ আত্মগোপন করিয়াই তাহার এতকাল কাটিয়াছে , কখনো তীর্থে বাহির হন নাই, কোন দেবমন্দিরে প্রবেশ করেন নাই, কখনো গঙ্গাস্নানে যান নাই কত পৰ্ব্বদিন, কত শুভক্ষণ, কত স্বানের যোগ বহিয়া গেছে—সাহস করিয়া কোনদিন পথের বারাপীয় পৰ্য্যন্ত দাড়ান নাই, পাছে পরিচিত কাহারো তিনি চোখে পড়েন। সেদিন রাখালের ঘরের মধ্যে অকস্মাৎ একটুখানি আবরণ উঠিয়াছে—আজ সকলের কাছেই তাহার ভয় ভাঙিল, লঙ্গা ঘুচিল। রেণু এখনো শুনে নাই, কিন্তু শুনিতে তাহার বাকী থাকিবে না। তখন সে হয়তো এমনি নীরবে ক্ষমা করিবে । তাহার পরে কাহারে রাগ নাই, অভিমান নাই ; ব্যথা দিতে এতটুকু কটাক্ষ পর্য্যন্ত কেহ করে নাই। দুঃখের দিনে তিনি যে দয়া করিয়া তাহদের খোজ লইতে আসিয়াছেন ইহাতেই সকলে কৃতজ্ঞ । ব্যস্ত হইয়া ব্ৰজবাবু স্বহস্তে আসন দিতে আসিয়াছিলেন তীহাকে বসিবার আসন— যেন অতিথির পরিচর্য্যায় কোথাও না ক্রটি হয়। অর্থাৎ পরিপূর্ণ বিচ্ছেদের আর বাকী কিছু নাই, চলিয়া আসিবার কালে সবিতা এই কথাটাই নিঃসংশয়ে জানিয়া আসিল । রেণু জানে তাহার পিতা নিঃস্ব । সে জানে তাহার ভবিষ্যতের সকল স্থখসৌভাগ্যের আশা নিমূল হইয়াছে। কিন্তু এই লইয়া শোক করিতে বসে নাই, দুৰ্দ্দশাকে সে অবিচলিত ধৈর্ধ্যে স্বীকার করিয়াছে। সঙ্কল্প করিয়াছে, ভালো হইয়া দরিদ্র পিতাকে সঙ্গে করিয়া সে তাহদের নিভৃত পল্লীগৃহে ফিরিয়া যাইবে—তাহার সেবা করিয়া সেইখানেই জীবন অতিবাহিত করিবে । ব্ৰজবাবু বলিয়াছেন, রেণু জানে তাহার মা বাচিয় আছে—ম তাহার অগাধ ঐশ্বর্ষ্যে মুখে আছে। স্বামীর এই কথাটা যতবার তাহীর মনে পড়িল, ততবারই সর্বাঙ্গ ব্যাপিয়া লজ্জায় কণ্টক্ষিত হইয়া উঠিল । ইহা মিথ্যা নয়—কিন্তু ইহাই কি সত্য ? মেয়েকে তিনি দেখেন নাই, রাখালের মুখে আভাসে তাহার রূপের বিবরণ শুনিয়াছেন, —শুনিয়াছেন সে নাকি তাহার মায়ের মতোই দেখিতে। নিজের মুখ মনে করিয়া সে-ছবি আঁকিবার চেষ্টা করিলেন, স্পষ্ট তেমন হইল না, তবুও রোগ-তপ্ত তাহার অপেন মুখই যেন তাহার মানস-পটে বার বার ফুটিয়া উঠিতে লাগিল । পাড়াগায়ের দুঃখ-দুর্দশার কত সম্ভব-অসম্ভব মূৰ্ত্তিই যে তাহার কল্পনায় আসিতে যাইতে লাগিল তাহার সংখ্যা নাই, এবং সমস্তই যেন সেই একটিমাত্র পাণ্ডুয়, কা Ե-ի به سه د: