পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

wo छाॉर्छाझेश ! ডাক শুনিয়া বিশ্বেশ্বরী ভাড়ার ঘর হইতে বাহিরে আসিলেন ; বেণীর বয়সের সঙ্গে তুলনা করিলে তাহার জননীর বয়স পঞ্চাশের কম হওয়া উচিত নয়, কিন্তু দেখিলে কিছুতেই চল্লিশের বেশী বলিয়া মনে হয় না। রমেশ নির্নিমেষ-চক্ষে চাহিয়া রহিল। আজও সেই কাচা সোনার বর্ণ। একদিন যে রূপের খ্যাতি এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ ছিল, আজও সেই অনিন্দ্য সৌন্দর্ঘ্য তাহার নিটোল পরিপূর্ণ দেহটিকে বর্জন করিয়া দূরে যাইতে পারে নাই। মাথার চুলগুলি ছোট করিয়া ছাট, স্বমুখেই দুই-একগাছি কুঞ্চিত হইয়া কপালের উপর পড়িয়াছে। চিবুক, কপোল, ওষ্ঠাধর, ললাট সবগুলি যেন কোন বড় শিল্পীর বহু স্বত্বের বহু সাধনার ফল। সবচেয়ে আশ্চর্য র্তাহার দুইটি চক্ষুর দৃষ্টি । সেদিকে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিলে সমস্ত অন্ত:করণ যেন মোহাবিষ্ট হইয়া আসিতে থাকে। এই জ্যাঠাইম রমেশকে এবং বিশেষ করিয়া তাহার পরলোকগত জননীকে এক সময় বড় ভালবাসিতেন। বধু-বয়সে যখন ছেলেরা হয় নাই—শাশুড়ী-ননদের যন্ত্রণায় লুকাইয়া বসিয়া এই দু'টি জায়ে তখন একযোগে চোখের জল ফেলিতেন— তখন এই স্নেহের প্রথম গ্রন্থি বন্ধন হয়। তার পরে, গৃহ-বিচ্ছেদ, মামলা-মোকদ্দমা, পৃথক হওয়া, কত রকমের ঝড়-ঝাপ্টা এই দুইটি সংসারের উপর দিয়া বহিয়া গিয়াছে, বিবাদের উত্তাপে বাধন শিথিল হইয়াছে, কিন্তু একেবারে বিচ্ছিন্ন হইতে পারে নাই । বহুবর্ষ পরে সেই ছোটবোঁয়ের ভাড়ার ঘরে ঢুকিয় তাহারই হাতে সাজানো এই সমস্ত বহু পুরাতন হাড়ি-কলসির পানে চাহিয়া জ্যাঠাইমার চোখ দিয়া জল ঝরিয়া পড়িতেছিল । রমেশের আহবানে যখন তিনি চোখ মুছিয়া বাহির হইয়া আসিলেন, তখন সেই দুটি আরক্ত আর্দ্র চক্ষু-পল্লবের পানে চাহিয়া রমেশ ক্ষণকালের জন্য বিস্ময়াপন্ন হইয়া রহিল। জ্যাঠাইমা তাহা টের পাইলেন। তাহাতেই বোধ করি এই সদ্য-পিতৃহীন রমেশের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতেই তাহার বুকের ভিতরটা যেভাবে হাহাকার করিয়া উঠিল, তাহার লেশমাত্র তিনি বাইরে প্রকাশ পাইতে দিলেন না। বরং একটুখানি হাসিয়া বলিলেন, চিনতে পারিস্ রমেশ ? জবাব দিতে গিয়া রমেশের ঠোট কাপিয়া গেল। মা মারা গেলে যতদিন না সে মামার বাড়ি গিয়াছিল, ততদিন এই জ্যাঠাইমা তাহাকে বুকে করিয়া রাখিয়াছিলেন এবং কিছুতে ছাড়িতে চাহেন নাই। সে-ও মনে পড়িল এবং এ-ও মনে হইল সেদিন ও-বাড়িতে গেলে জ্যাঠাইমা বাড়ি নাই বলিয়া দেখা পৰ্য্যস্ত করেন 28& २ु-3के