পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*ईौ-जभांछ কি গুরুভার! সে মিথ্যা বলিয়া আসে নাই, এ কৈফিয়ত তাহার অন্তৰ্য্যামী ত কোনমতেই মঞ্জুর করিল না! মিথ্যা বলে নাই বটে, কিন্তু সত্য প্রকাশও করে নাই। সত্য-গোপনের অপরাধ যে এত বড়, সে যে এমন কলিয়া তাঁহাকে অহরহ দগ্ধ করিয়া ফেলিবে, এ যদি সে একবারও জানিতে পাবিত । রহিযা বহিযা তাহার কেবলই মনে পড়ে ভৈরবেব যে অপরাধে রমেশ আত্মহারা হইয়াছিল, সে অপরাধ কত বড় ! অথচ তাহার একটিমাত্র কথায সে সমস্ত মার্জনা করিয়া, দ্বিরুক্তি না করিয়া চলিয়া গিয়াছিল। তাহার ইচ্ছাকে এমন করিয়া শিরোধাৰ্য্য করিধা কে কবে তাঁহাকে এত সম্মানিত করিয়াছিল! নিজের মধ্যে পুডিয়া পুঙিযা আজকাল একটা সত্যের সে যেন দেখা পাইতেছিল। যে সমাজের ভয়ে সে এত বড় গহিত কৰ্ম্ম করিষা বসিল, সে সমাজ কোথায় ? বেণী প্রভৃতি কয়েকজন সমাজপতির স্বার্থ ও ক্রুর হিংসার বাহিরে কোথাও কি তাহার অস্তিত্ব আছে ? গোবিন্দের এক বিধবা ভ্রাতৃবধুর কথা কে না জানে ? বেণীর সহিত তাহার সংস্রবের কথা গ্রামের মধ্যে কাহারও অবিদিত নাই। অথচ সমাজের আশ্রযে সে নিষ্কণ্টকে বসিয়া আছে এবং সেই বেণীই সমাজপতি। তাহারই সামাজিক শৃঙ্খল সৰ্ব্বাঙ্গে শতপাকে জড়াইয়া রাখাই চরম সার্থকতা ! ইহাই হিন্দুয়ানী ! কিন্তু যে ভৈরব এত অনর্থের মূল, রমা নিজের দিকে চাহিয়া তাহার উপরেও আর বাগ করিতে পাবিল না। মেযে তাহার বারে বছরের হইয়াছে—অতি শীঘ্র বিবাহ দিতে না পরিলে একঘরে হইতে হইবে এবং বাডিমৃদ্ধ লোকের জাত যাইবে । এ প্রবাদের আশঙ্কামাত্রেই ত প্রত্যেক হিন্দুর হাত-পা পেটের ভিতরে ঢুকিয়া যায়। সে নিজে তাহার এত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও যে সমাজের ভয় কাটাইতে পারে নাই—গরীব ভৈরব কাটাইবে কি করিয়া ! বেণীর বিরুদ্ধত করা তাহার পক্ষে কি ভয়ানক মারাত্মক ব্যাপার এ কথা ত কোনমতেই সে অস্বীকার করিতে পারে ন! । বৃদ্ধ সনাতন হাজরা বাটীর সম্মুখ দিয়া যাইতেছিল, গোবিন্দ দেখিতে পাইয়া ডাকাডাকি, অনুনয়-বিনয়, শেষকালে একরকম জোর করিয়া ধরিয়া আনিয়া বেণীবাবুর সামনে হাজির করিয়া দিল। বেণী গরম হইয়া কহিল, এত দেমাক কবে থেকে হ’ল বে সনাতন ? বলি তোদের ঘাড়ে কি আজকাল আর একটা করে মাথা গজিয়েচে রে ! সনাতন কহিল, দুটো করে মাথা আর কার থাকে বড়বাৰু? আপনাদের থাকে না, ত আমাদের মত গরীবের ! কি বললি রে! বলিয়া হঁক দিয়া বেণী ক্রোধে নিৰ্ব্বাক হইয়া গেল, ইহারই সৰ্ব্বস্ব যেদিন বেণীর হাতে বাধা ছিল, তখনই এই সনাতন দুবেলা আসিয়া বড়বাবুর পদলেহন করিয়া যাইত—আজ তাঁহারই মুখে এই কথা ! ২১৭ سطة سمية