পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ঠাকুরপোর বিয়েতে পাঁচশ টাকা দিতে হয়নি ? না না, তুমি আমার ও সব কথায় থেক না—আমাদের যা নিয়ম, আমি তাই করব। নীলাম্বর অধিকতর আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, আমাদের নিয়ম মেয়ে বেচা—এ খবর কে তোকে দিলে ? আমরা পণ দিই বটে, কিন্তু মেয়ের বিয়েতে এক পয়সাও নিইনে— আমি পুটিকে দান করব। বিরাজ স্বামীর মুখ-চোখের ভাব লক্ষ্য করিয়া হঠাৎ হাসিয়া ফেলিয়া বলিল, আচ্ছ, তাই ক’রে—এখন খাও-ছুতে ক’রে যেন উঠে যেও না । নীলাম্বর হাসিয়া ফেলিয়া বলিল, আমি ছুতে ক’রে উঠে যাই ? বিরাজ কহিল, ন—একদিনও না। ও দোষটি তোমার শক্ত রেও দিতে পারবে না। এজন্যে কতদিন যে আমাকে উপোস ক'রে কাটাতে হযেছে, সে ছোটবোঁ জানে। ও কি ? খাওয়া হয়ে গেল নাকি ? বিরাজ ব্যস্ত হইয়া পাখাটা ফেলিয়া দিয়া দুধের বাটি চাপিয়া ধরিয়া বলিল, মাথ৷ খাও, উঠ না—ও পুটি শীগগির যা-ছোটবেীর কাছ থেকে দুটো সন্দেশ নিয়ে আয়— না না, ঘাড় নাড়লে হবে না—তোমার কখখন পেট ভরেনি-মাইরি বলছি, আমি তা হ’লে ভাত খাব না-কাল রাত্তির একটা পৰ্য্যন্ত জেগে সন্দেশ তৈরি করেচি। হরিমতি একটা রেকাবিতে সবগুলা সন্দেশ লইয়া ছুটিয়া আসিয়া পাতের কাছে রাখিয়া দিল । নীলাম্বর হাসিয়া উঠিয়া বলিল, আচ্ছা, তুমিই বল, এতগুলো সন্দেশ এখন খেতে পারি ? বিরাজ মিষ্টায়ের পরিমাণ দেখিয়া মুখ নীচু করিয়া বলিল, গল্প করতে করতে অন্যমনস্ক হয়ে খাও—পারবে । তবু খেতে হবে। বিরাজ কহিল, ই। হয় মাছ ছাড়তে পাবে না, না হয় এ-জিনিসটা একটু বেশী ক’রে খেতেই হবে । নীলাম্বর রেকাবটি টানিয়া লইয়া বলিল, তোর এই খাবার জুলুমের ভয়ে ইচ্ছে করে, বনে গিয়ে বসে থাকি । পুটি বলিয়া উঠিল, আমাকেও দাদা— বিরাজ ধমক দিয়া উঠিল, চুপ কর পোড়ারমুখি, খাবিনে ত বাচবি কি ক’রে ? এই নালিশ করা বেরুবে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে। ኗፀዬ