পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/৩৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ দয়া করে এইটি শুধু ক’রে, পাগল বলে আবার বেন নিৰ্ব্বাসনে পাঠিয়ে न ! শৈলেশ নিঃশৰে নতযুখে আহার করিতে লাগিল। সোমেন কহিল, খাৰে চল মা ! কালকের সেই জটাই পক্ষীর গল্পটা কিন্তু আজ শেষ করতে হবে । জটাইয়ের ছেলে তখন কি করল মা ? শৈলেশ মুখ তুলিয়া কহিল, জটাইয়ের ছেলে যাই করুক, এ ছেলেটি ত দেখচি তোমাকে একেবারে পেয়ে বসেচে । উৰা ছেলের মাথায় হাত বুলাইয়া দিতে দিতে চুপ করিয়া রহিল। শৈলেশ কহিল, এর কারণ কি জান ? উষা কহিল, কারণ আর কি । মা নেই, ছেলেমাস্থ্য একলা বাড়িতে— তা বটে, কিন্তু মা থাকলেও এত আদর বোধ হয় ও কখনো পায়নি। উষার মুখ আরক্ত হইয়া উঠিল, কছিল, তোমার এক কথা। আর একটু মাংস আনতে বলে কি ? আচ্ছা, না খাও—আমার মাথা খাও, মেঠাই ফুটে ফেলে উঠো না কিন্তু। সমস্ত দিন পরে খেতে বসেচ, এ কৰা একটু হিসেব কর। শৈলেশ ই করিয়৷ উষার মূখের প্রতি চাহিয়া রহিল। খাবার জন্য এই পীড়াপীড়ি, এমনি করিয়া ব্যগ্র-ব্যাকুল মাথার দিব্যি দেওয়া–যেন বহুকালের পরে ছেলেবেলায় শোনা গানের একটা শেষ চরণের মত তাহার কানে আসিয়া পৌঁছিল। সে নিজেও তাহার মায়ের এক ছেলে -অকস্মাৎ সেই কথা স্মরণ করিয়া বুকের মধ্যে যেন তাহার ধড়ফড়, করিয়া উঠিল। মেঠাই ফেলিয়া উঠিবার তাহার শক্তিই রছিল না। ভাঙিয়া খানিকট মুখে পুরিয়া দিয়া আস্তে আস্তে বলিল, কোন দিকের কোন হিসাবই আর আমি করব না উষা, এ ভারটা তোমাকে একেবারে দিয়া আমি নিশ্চিন্ত হতে চাই। এই বলিয়া সে গাত্ৰোখান করিল।

  • Cobo