পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ખરું થાં সতীশের কঠোর শাসনে বাসায় মাছ-মাংস আসিবার যো নাই, ব্রাহ্ম-মুহূৰ্ত্তে উঠিয় সকলকে স্তোত্রপাঠ, ধ্যান, প্রাণায়াম প্রভৃতি শাস্ত্রবিহিত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করিতে হয় ; পরে লেখাপড় ও নিত্যকৰ্ম্ম। কিন্তু কর্তৃপক্ষনের ইহাতেও মন উঠিল না, সাধন-মার্গ ক্রমশঃ কঠোরতর হইয়া উঠিল। বামুন পলাইল, চাকরদের জবাব দেওয়া হইল— অতএব এ কাজগুলাও পালা করিয়া ছেলেদের ঘাড়ে পড়িল । কোনদিন একটা তরকারি হয়, কোনদিন বা তাহাও হইয়া উঠে না ; ছেলেদের পড়া-শুনা গেল—ইস্কুলে তাহারা বকুনি খাইতে লাগিল, কিন্তু কঠিন বাধা-নিয়মের শৈথিল্য ঘটিল না—এমনি কড়াকড়ি। কেবল একটা অনিয়ম ছিল—বাহিরে কোথাও আহারের নিমন্ত্রণ জুটিলে। নীলিমার কি একটা ব্ৰত-উদ্যাপন উপলক্ষে এই ব্যতিক্রম হরেন্দ্র জোর করিয়া বাহাল করিয়াছিল । এ-ছাড়া আর কোথাও কোন মার্জন ছিল না । ছেলেদের খালি পা, রুক্ষ মাথা—পাছে কোথাও কোন ছিদ্র-পথে বিলাসিত অনধিকার প্রবেশ করে সেদিকে সতীশের অতি সতর্ক চক্ষু অমুক্ষণ পাহারা দিতে লাগিল। মোটামুটি এইভাবেই আশ্রমের দিন কাটিতেছিল। সতীশের ত কথাই নাই, হরেন্দ্রর মনের মধ্যেও শ্লাঘার অবধি রহিল না। বাহিরের কাহারো কাছে তাহারা বিশেষ কিছুই প্রকাশ করিত না, কিন্তু নিজেদের মধ্যে হরেন্দ্র আত্মপ্রসাদ ও পরিতৃপ্তির উচ্ছসিত আবেগে প্রায়ই এই কথাটা বলিত যে, একটা ছেলেও যদি সে মানু্য করিয়া তুলিতে পারে ত এ-জীবনের চরম সার্থকতা লাভ করিয়াছে মনে করিবে। সতীশ কথা কহিত না, বিনয়ে মুখখানি শুধু আনত করিত। শুধু একটা বিষয়ে হরেন্দ্র এবং সতীশ উভয়েই পীড়া বোধ করিতেছিল। কিছুদিন হইতে উভয়েই অনুভব করিতেছিল যে, রাজেনের আচরণ পূর্বের মত আর নাই। আশ্রমের কোন কাজেই সে আর গা দেয় না, সকালের সাধন-ভজনের নিত্যকৰ্ম্মে এখন সে প্রায়ই অনুপস্থিত থাকে ; জিজ্ঞাসা করিলে বলে, শরীর ভাল নাই। অথচ শরীর ভাল না-থাকার বিশেষ কোন লক্ষণও দেখা যায় না। কিন্তু তাহার নালিশ, কেন সে এমন হইতেছে প্রশ্ন করিয়াও জবাব পাওয়া যায় না। কোনদিন হয়ত প্রভাতেই কোথায় চলিয়া যায়, সারাদিন আসে না, রাত্রে যখন বাড়ি ফিরে তখন এমনি তাহার চেহারা যে, কারণ জিজ্ঞাসা করিতে হরেন্দ্ররও সাহস হয় না। অথচ এ-সকল একান্তই আশ্রমের নিয়মবিরুদ্ধ ; এক হরেন্দ্র ব্যতীত সন্ধ্যার পরে কাহারে বাহিরে থাকিবার যো নাই—এ-কথা রাজেন ভাল করিয়াই জানে, অথচ গ্রাহ করে না। আশ্রমের সেক্রেটারি সতীশ, শৃঙ্খলারক্ষার তার তাহারই উপরে। এইসকল অনাচারের বিরুদ্ধে সে হরেন্দ্রর কাছে ঠিক যে অভিযোগ করিত তাহা নয়, কিন্তু 弹 .ه لاd