পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিত্য-সংগ্ৰহ ক্ষতি ? ওকে ত জানেন না, না জানলে সে ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যায় না। আশ্রম না থাকে সেও সইবে, কিন্তু ও-ক্ষতি আমার সইবে না । এই বলিয়া হরেন্দ্র মিনিট-খানেক চুপ করিয়া প্রসঙ্গটা হঠাৎ বদলাইয়া দিল। কহিল, একটা মজার কাও ঘটেচে । কারও সাধ্য নেই সে কল্পনা করে। কাল সেজদার ওখান থেকে অনেক রাত্রে ফিরে গিয়ে দেখি অজিতবাবু উপস্থিত। ভয় পেয়ে গেলাম, ব্যাপার কি ? অসুখ বাড়ল নাকি ? না, সে-সব কিছু নয়, বাক্স-বিছানা নিয়ে তিনি এসেচেন আশ্রমবাসী হতে । ইতিমধ্যে সতীশের সঙ্গে কথা পাকা হয়ে গেছে—আশ্রমের কাজে জীবন কাটাবেন এই তার পণ, এর আর নড়-চড় নেই। বড়লোক পেলে আমাদের ভালই হয়, কিন্তু শঙ্কা হ’ল ভেতরে কি একটা গোলমাল আছে। সকালে আগুবাবুর কাছে গেলাম, তিনি শুনে বললেন, সঙ্কল্প অতিশয় সাধু, কিন্তু ভারতে আশ্রমের ত অভাব নেই, সে আগ্রা ছাড়া অার কোথাও গিয়ে এ-বৃত্তি অবলম্বন করলে আমি দিনকতক টিকতে পারতাম। আমাকে দেখচি তল্পি বাধতে হ’ল । কমল কোনরূপ বিস্ময় প্রকাশ করিল না, চুপ করিয়া রহিল। হরেন্দ্ৰ কহিল, র্তার ওখান থেকেই এখানে আসচি। ভাবচি ফিরে গিয়ে অজিতবাবুকে বলব কি। 强 কমল বুঝিল শিবনাথকে স্থানান্তরিত করার উপলক্ষে অনেক কঠিন বাদ-প্রতিবাদ হইয়া গেছে। হয়ত প্রকাশ্বে এবং স্পষ্ট করিয়া একটা কথাও উচ্চারিত হয় নাই, সমস্তই নিঃশব্দে ঘটিয়াছে, তথাপি কর্কশতায় সে যে সৰ্ব্বপ্রকার কলহকে ছাপাইয়া গেছে ইহাতে সন্দেহ করিবার নাই । কিন্তু একটা কথারও সে উত্তর করিল না, তেমনি নীরবে বসিয়া রহিল । হরেন্দ্র কহিতে লাগিল, মনে হয় আপ্তবাবু সমস্তই শুনেচেন। শিবনাথের আপনার প্রতি আচরণে তিনি মৰ্ম্মাহত । একরকম জোর করেই তাকে বাড়ি থেকে বিদেয় করেচেন। মনোরমার বোধ হয় এ ইচ্ছা ছিল না, শিবনাথ তার গানের গুরু, কাছে রেখে চিকিৎসা করবার সঙ্কল্পই ছিল, কিন্তু সে হতে পেলে না। অজিতবাবু বোধ হয় এ-পক্ষ অবলম্বন করেই ঝগড়া করে ফেলেচেন । কমল একটুখানি হাসিল, কহিল, আশ্চৰ্য্য নয়। কিন্তু শুনলেন কার কাছে ? রাজেন বললে ? [. সে ? সে পাত্রই ও নয়। জানলেও বলবে না। এ আমার অনুমান। তাই ভাবচি, মিটমাটত হবেই, মাঝে থেকে অজিতকে চটিয়ে লাভ কি ? চুপচাপ থাকাই ভাল। যতদিন সে আশ্রমে থাকে যত্নের ক্রটি হবে না । Sy