পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিঙ্গগ্রহ আপ্তবাবু হাসিয়া কহিলেন, আছে। অজিতের গল্পের গ্রন্থকার বোধ করি দুর্ভাগ্য বিশেষণটা বিশেষ করে সেই পুরুষদের স্মরণ করে লিখেচেন। কিন্তু রাত্রি তো অনেক হয়ে গেল অজিত, এর শেষটা কি ? অজিত চকিত হইয়া মুখ তুলিয়া চাহিল, কহিল, আমি আপনার গল্পের কথাই" ভাবছিলাম। অত ভালবেসেও ছেলেটি কেন যে তাকে গ্রহণ করতে পারলে না, এতবড় সত্য বস্তুটা কোথা দিয়ে যে এক নিমিষে মিথ্যের মধ্যে গিয়ে দাড়ালো, সারাজীবন হয়ত মহিলাটি এই কথাই ভেবেচেন—একদিন যেদিন আমি নারী ছিলুম ! নারীত্বের সত্যকার অবসান যে নারীর অজ্ঞাতসারেই কবে ঘটে এর পূর্বে হয়ত সেই বিগত-যৌবন নারী চিন্তাও করেননি। কিন্তু তোমার গল্পের শেষটা ? অজিত শান্তভাবে কহিল, আজ থাকৃ। যৌবনের ঐ শেষটাই যে এখনো নিঃশেষ হয়ে যায়নি—নিজের এবং পরের কাছে মেয়েদের এই প্রতারণার করুণ কাহিনী দিয়েই গল্পের শেষটুকু সমাপ্ত হয়েচে । সে বরঞ্চ অন্যদিন বলব। নীলিমা ঘাড় নাড়িয়া বলিল, না না তার চেয়ে ওটুকু বরঞ্চ অসমাপ্ত থাক্। আপ্তবাবু সায় দিলেন, ব্যথার সহিত কহিলেন, বাস্তবিক এই সময়টাই মেয়েদের নিঃসঙ্গ জীবনের সবচেয়ে দুঃসময় । অসহিষ্ণু, কপট, পরছিদ্রান্বেষী, এমন কি নিষ্ঠুর হয়—তাই বোধ হয় সকল দেশেই মামুষে এদের—এই অবিবাহিত প্রৌঢ়া নারীদের— এড়িয়ে চলতে চায় নীলিমা । =می নীলিমা হাসিয়া কহিল, মেয়েদের বলা উচিত নয় আপ্তবাবু, বলা উচিত তোমাদের মত পতি-পুত্রহীন দুর্ভাগা মেয়েদের এড়িয়ে চলতে চায়। আপ্তবাবু ইহার জবাব দিলেন না, কিন্তু ইঙ্গিতটুকু গ্রহণ করিলেন। বলিলেন, অথচ স্বামী-পুত্রে সৌভাগ্যবতী যারা, তারা স্নেহে, প্রেমে, .সৌন্দর্য্যে, মাধুর্য্যে এমনি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেন যে, জীবনের এতবড় সঙ্কটকাল যে কবে কোন পথে অতিবাহিত হয়ে যায় টেরও পান না । নীলিমা বলিল, ভাগ্যদেবতাদের ঈর্ষা করিনে আণ্ডবাবু, সে প্রেরণা মনের মধ্যে আজও এসে পৌছোয়নি, কিন্তু ভাগ্যদোষে র্যারা আমাদের মত ভবিষ্যতের সকল আশায় জলাঞ্জলি দিয়েচেন তাদের পথের নির্দেশ কোনদিকে আমাকে বলে দিতে পারেন ? s আপ্তবাবু কিছুক্ষণ স্তৰভাবে বসিয়া রছিলেন, পরে কহিলেন, এর জবাবে আমি শুধু বড়দের কথার •ŕಗಾ ಇಡ್ಲm নীলিমা, তার বেশি শক্তি নেই। ২১৮