পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ এই উক্তির পরে মনোরম আর একবার উঠিবার চেষ্টা করিল, কিন্তু এবারও তাহার দুই পা পাথরের ন্যায় ভারি হইয়া রহিল। কৌতুহল ও উত্তেজনার বশে কেহই তাহার প্রতি চাহে নাই। চাঙ্গিলে হয়ত ভয় পাইত। হরেন্দ্ৰ কহিল, তা হলে এটা বোধ হয় সিভিল বিবাহ-ই হ’লে ? শিবনাথ ঘাড় নাড়িয়া জবাব দিল, না—বিবাহু হ’লো শৈব-মতে । অবিনাশ কছিলেন, অর্থাৎ ফাকির রাস্তাটুকু যেন দশ দিক দিসেই খোলা থাকে, না শিবনাথ ? শিবনাথ সহস্তে কহিল, এটা ক্রোধের কথা অধিনাশবাবু! নইলে বাবা দাড়িয়ে থেকে যে বিবাহ দিয়ে গিয়েছিলেন তার মধ্যে ত ফাক ছিল না, অথচ ফাকি যথেষ্টই ছিল। সেটা বার করার চোখ থাকা চাই । অবিনাশ উত্তর দিতে পারিল না, শুধু সমস্ত মুখ তাহার ক্রোধে আরক্ত হইয়া উঠিল। আশুবাবু নিঃশব্দ নতমুখে বসিয়া কেবলি ভাবিতে লাগিলেন, এ কি হইল ! এ কি হইল ! মিনিট দুই-তিন কাহারও মুখে কথা নাই, নিরানন্দ ও কলহের অবরুদ্ধ বাতাসে ঘর ভরিয়া গেছে—বাহিরের একট দমকা হাওয়া না পাইলেই নয়, ঠিক এমনি মনোভাব লইয়া অধিনাশবাবু অকস্মাৎ বলিসা উঠিলেন, যাক, যাক, যাক—যাক এ-সব কথা শিবনাথ, তা হলে সেই পাপরের কারবারটা করচ ? না ! শিবনাথ বলিল, হঁ।। তোমার বন্ধুর নাবালক ছেলে-মেযেদের ব্যবস্থা ত তোমাকেই করতে হ’ল ? তাদের মা আছেন, না ? অবস্থা কেমন ? তেমন ভাল নয় বোধ হয় ? না, খুব খারাপ। অবিনাশ কহিলেন, আহা ! হঠাৎ মারা গেলেন, আমরা ভেবেছিলাম টাকাকড়ি কিছু রেখে গেছেন। কিন্তু তোমার বন্ধু ছিলেন বটে ! অকৃত্রিম সুহৃদ ! শিবনাথ ঘাড় নাড়িয়া কহিল, হুঁ, আমরা পাঠশালা থেকে একসঙ্গে পড়েছিলাম। অবিনাশ বলিলেন, তই তোমার এতখানি সে-সময়ে তিনি করতে পেরেছিলেন । একটুখানি থামিয়া কহিলেন, কিন্তু সে ধাই হোক শিবনাথ, এখন একাকী তোমাকেই যখন সমস্ত কারবারটা দেখতে হবে একটা অংশের দাপি করলে না কেন ? মাইনের মত— t শিবনাথ কথাটা শেষ করিতে দিল না, কছিল, অংশ কিসের? কারবার ত্র একলা আমার । >8