পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন কমল কছিল, শুধু ভুলই যে ভাঙে তা নয় আপ্তবাবু, সত্যিকার ভালবাসাও সংসারে এমনি ভেঙে পড়ে। তাই অধিকাংশ ভালবাসার বিবাহই হয়ে যায় ক্ষণস্থায়ী। এই জষ্ঠেই ও-দেশের এত দুর্নাম, এত বিবাহ বিচ্ছিন্ন করার মামলা । শুনিয়া আণ্ডবাবু সহসা যেন একটা আলো দেখিতে পাইলেন, উচ্ছসিত আগ্রহে কহিয়া উঠিলেন, তাই বল কমল, তাই বল। এ যে আমি স্বচক্ষে অনেক দেখেচি। নীলিমা অবাক হইয়া চাহিয়া রছিল। অtশুবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, কিন্তু আমাদের এ-দেশের বিবাহ-প্রথা ? তাকে তুমি কি বলে—সে যে সমস্ত জীবনে ভাঙে না কমল ? কমল কহিল, ভাঙবার কথাও নয় আগুবাবু। সে ত অনভিজ্ঞ-যৌবনের ক্ষ্যাপামি নয়, বহুদৰ্শী গুরুজনের হিসেব-কর কারবার। স্বপ্নের মূলধন নয়—চোখ চেয়ে, পাকা-লোকের যাচাই-বাছাই-করা থাটি জিনিস। অঁাকের মধ্যে মারাত্মক গলদ না থাকলে তাতে সহজে ফাটল ধরে না । এদেশ-ওদেশ সব দেশেই সে ভারি মজবুত, সারাজীবন বজের মত টিকে থাকে। আপ্তবাবু নিশ্বাস ফেলিয়া স্থির হইয়া রহিলেন, মুখে তার উত্তর যোগাইল না। নীলিমা নিঃশব্দে চাহিয়াই ছিল, ধীরে ধীরে প্রশ্ন করিল, কমল, তোমার কথাই যদি সত্যিই হয়, সত্যিকার ভালবাসাও যদি ভুলের মতই সহজে ভেঙে পড়ে, মানুষে তবে দাড়াবে কিসে? তার আশা করবার বাকি থাকবে কি ? { } কমল বলিল, যে-স্বৰ্গবাসের মিয়াদ ফুরুলো, থাকবে তারই একান্ত মধুর স্থতি, আর তারই পাশে ব্যথার সমুদ্র। আশুবাবুর শাস্তি ও মুখের সীমা ছিল না, কিন্তু তার বেশি ওঁর পুজি নেই। ভাগ্য যাকে ঐটুকুমাত্র দিয়েই বিদায় করচে আমরা তাকে ক্ষমা করা ছাড়া আর কি করতে পারি দিদি ? একটুখানি থামিয়া বলিল, লোকে বাইরে থেকে হঠাৎ ভূ- বুঝি সব গেলো। বন্ধুজনের ভয়ের অস্ত থাকে না, দু’হাত দিয়ে পৰ্থ আগলাতে চ, కా জানে তার হিসেবের বাইরে বুঝি সবই শূন্ত। শূন্ত নয দিদি। সব য় যা হাতে থাকে মাণিকের মত তা হাতের মুঠোর মধ্যেই ধরে। বস্তু-বাহুল্যে পথ-জুড়ে তা দিয়ে শোভাযাত্রা করা যায় না বলেই দর্শকের দল হতাশ হয়ে ধিক্কার দিয়ে ঘরে ফেরে, বলে ঐ ত সৰ্ব্বনাশ । নীলিমা বলিল, বলার হেতু আছে কমল। মণিমাণিক্য সকলের জন্ত নয়, সাধারণের জন্তও নয়। আপাদ-মস্তক সোনা-রূপীর গয়না না পেলে যাদের মন ওঠে না, তারা তোমার ঐ একফোটা হীরে-মাণিকের কদর বুঝবে না। যাদের অনেক ९७१