পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী পাব । বনশ্যাম আমার পেটের ছেলের চেয়েও বেশি ; সে বেঁচে থাকলেই তবে সব বজায় থাকবে, এইটি বুঝে শুধু কাজ কর মা, আর কিছু আমি চাইনে । তার কাজ তিনি করলেন ; আমার কাজ আমি করলুম, বললুম, আচ্ছ। কিন্তু সে ওই কুস্তিগীরের তাল ঠোকার মত ; প্যাচ মারতে যে দু’জনেই জানি, তা ইসারায় জানিয়ে দেওয়া । কিন্তু কত শীঘ্ৰ মেয়েমানুষ যে মেয়েমানুষকে চিনতে পারে, এ এক আশ্চৰ্য্য ব্যাপার। র্ত্যকে জানতে আমারও যেমন দেরি হ’ল না, আমাকেও ছ’দিনের মধ্যে চিনে নিয়ে তিনিও তেমনই আরামের নিশ্বাস ফেললেন, বেশ বুঝলেন, স্বামীর খাওয়াপরা, ওঠা-বসা, খরচ-পত্র নিয়ে দিবারাত্র চক্র ধরে ফোস ফোস করে বেড়াবার মত আমার উৎসাহও নেই, প্রবৃত্তিও নেই। মেয়েমানুষের তুণে যত-প্রকার দিব্যাস্ত্র আছে, "আড়ি-পাতাটা ব্ৰহ্মাস্ত্র। স্থবিধে পেলে এতে মা-মেয়ে, শাশুড়ী-বেী, জী-ননদ, কেউ কাকে খাতির করে না। আমি ঠিক জানি, আমি যে পালঙ্কে না শুয়ে ঘরের মেঝেতে একটা মাদুর টেনে নিয়ে সারারাত্রি পড়ে থাকতুম, এ সুসংবাদ তার আগোচর ছিল না। আগে যে ভেবেছিলুম, নরেনের বদলে আর কারো ঘর করতে হলে সেইদিনই আমার বুক ফেটে যাবে, দেখলুম সেটা ভুল। ফাটবার চেরবার কোন লক্ষণই টের পেলুম না । কিন্তু তাই বলে একশয্যায় গুতেও আমার কিছুতেই প্রবৃত্তি হ’ল না । দেখলুম, আমার স্বামীটি অদ্ভুত প্রকৃতির লোক। আমার আচরণ নিয়ে তিনি কিছুদিন পর্য্যন্ত কোন কথাই কইলেন না। অথচ মনে রাগ কিংবা অভিমান করে আছেন, তাও না । শুধু একদিন একটু হেসে বললেন, ঘরে আর একটা খাট এনে বিছানাট বড় করে নিলে কি শুতে পার না ? আমি বললুম, দরকার কি, আমার ত এতে কষ্ট হয়না । তিনি বললেন, না হলেও একদিন অসুখ করতে পারে যে । আমি বললুম, তোমার এতই যদি ভয়, আমার আর কোন ঘরে শোবার ব্যবস্থা করে দিতে পার না ? তিনি বললেন, ছিঃ, তা কি হয় ? তাতে কত-রকমের অপ্রিয় আলোচনা উঠবে। বললুম, ওঠে উঠুক, আমি গ্রাহ করিনে। ཕུ་ཟླ তিনি একমুহূৰ্ত্ত চুপ করে আমার মুখের পানে চেয়ে থেকে বললেন, এতবড় বুকের পাট যে তোমার চিরকাল থাকবে, এমন কি কথা আছে ? বলে একটুখানি হেসে কাজে চলে গেলেন। 响 Ja☾