পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রই মামুষের শয়তানীর অস্ত নেই, দুঃসাহসেরও অবধি নেই। সে স্বচ্ছদে স্নেহের হাসিতে মুখখান রান্নাঘরের দিকে তুলে চেচিয়ে বললে, আমার কাছে তোর আবার লজ্জা কি রে সন্ধু ? আয় আয়, বেরিয়ে আয় । অনেকদিন দেখিনি, একবার দেখি । কাঠ হয়ে সেই দরজা ধরে দাড়িয়ে রইলুম। আমার মেজজাও রান্নাঘরে ছিল, ঠাট্টা করে বললে, দিদির সবটাতেই বাড়াবাড়ি। পাড়ার লোক, ভাইয়ের মত, বিয়ের দিন পর্য্যন্ত সামনে বেরিয়েচ, কথা কয়েচ, আর আজই যত লজ্জা ! একবার দেখতে চাচ্চেন, যাও না । এর আর জবাব দেব কি ? বেলা তখন দুটো-আড়াইটে, বাড়ির সবাই যে যার ঘরে গুয়েচে, চাকরটা এসে বাইরে থেকে বললে, বাবু পান চাইলেন মা । কে বাৰু? নরেনবাবু। তিনি শিকার করতে যাননি ? কই না, বৈঠকখানায় শুয়ে আছেন যে। তা হলে শিকারের ছলটাও মিথ্যে। পান পাঠিয়ে দিয়ে জানালায় এসে বসলুম। বাড়িতে আসা পৰ্য্যন্ত এই জানালাটিই ছিল সবচেয়ে আমার প্রিয়। নীচেই ফুল-বাগান, একঝাড় চামেলী ফুলের গাছ দিয়ে সন্মুখটা ঢাকা ; এখানে বসলে বাইরের সমস্ত দেখা যায়, কিন্তু বাইরে থেকে দেখা যায় না । আমি মামুযের মনের এই বড় একটা অদ্ভুত কাণ্ড দেখি যে, যে বিপদটা হঠাৎ তার ঘাড়ে এসে পড়ে তাকে একান্ত অস্থির ও উদ্বিগ্ন করে দিয়ে যায়, অনেক সময়ে সে তাকেই একপাশে ঠেলে দিয়ে একটা তুচ্ছ কথা চিন্তা করতে বসে যায়। বাইরে পান পাঠিয়ে দিয়ে আমি নরেনের কথাই ভাবতে বসেছিলুম সত্যি, কিন্তু কখন কোন মণকে যে আমার স্বামী এসে আমার সমস্ত মন জুড়ে বসে গিয়েছিলেন, সে আমি টেরও পাইনি। আমার স্বামীকে আমি যত দেখছিলুম ততই আশ্চর্ঘ্য হয়ে যাচ্ছিলুম। সবচেয়ে আশ্চৰ্য্য হ’তুম তার ক্ষমা করবার ক্ষমতা দেখে। আগে আগে মনে হ’ত এ তার দুৰ্ব্বলতা, পুরুষত্বের অভাব। শাসন করবার সাধ্য নেই বলেই ক্ষমা করেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছিল, ততই টের পাচ্ছিলুম ৰেমন বুদ্ধিমান তেমনি দৃঢ়। আমাকে ষে Ψoy"