স্বামী মুক্ত কি তোমার লোক ছিল ? বলে জোর করে তার হাত ছাড়াতে গেলুম, কিন্তু এবারেও সে তেমনি সজোরে ধরে রাখলে। তার চোখ দিয়ে ফোটা-দুই জলও গড়িয়ে পড়ল। বললে, সদু, এমনি করেই কি আমাদের জীবনের শেষ হবে ? অমন অমুখে না পড়লে আজ কেউ ত আমাদের আলাদা করে রাখতে পারত না ! যে অপরাধ আমার নিজের নয়, তার জন্য এতবড় শাস্তি ভোগ করব ? লোক ভগবান ভগবান করে, কিন্তু তিনি সত্যি থাকলে কি বিনা দোষে এতবড় সাজা আমাদের দিতেন? কখন না । তুমিই বা কিসের জন্য একজন অজানা-অচেনা মুখ্য-লোকের— থাক্, থাক, ও-কথা থাক । নরেন চমকে উঠে বললে, আচ্ছা, থাক, কিন্তু যদি জানতুম, তুমি মুখে আছ, মুখী হয়েচ, তা হলে হয়ত একদিন মনকে সাস্বনা দিতে পারতুম, কিন্তু কোন সম্বলই যে আমার হাতে নেই, আমি বঁাচব কি করে ? আবার তার চোখে জল এসে পড়ল। এবার সে আমার হাতটাই টেনে নিয়ে তার নিজের চোখের জল মুছে বললে, এমন কোন সভ্য দেশ পৃথিবীতে আছে—যেখানে এতবড় অন্যায় হতে পারত ! মেয়েমানুষ বলে কি তার প্রাণ নেই, তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিয়ে এমন করে তাকে সারাজীবন দগ্ধ করবার অধিকার সংসারে কার আছে ? কোন দেশের মেয়ের ইচ্ছে করলে এমন বিয়ে লাথি মেরে ভেঙে দিয়ে যেখানে খুশি চলে যেতে না পারে ? এ-সব কথা আমি সমস্তই জানতুম। আমার মামার ঘরে নব্য-যুগের সাম্য-মৈত্রী স্বাধীনতার কোন আলোচনাই বাকি ছিল না। আমার বুকের ভেতরটা কেমন যেন দুলতে লাগল। বললুম, তুমি আমাকে কি করতে বল ? নরেন বললে, আমি তোমাকে কোন কথাই বলব না। এইটুকু শুধু জানিয়ে যাব যে, মরণের গ্রাস থেকে উঠে পৰ্য্যন্ত আমি এই আজকের দিনের প্রতীক্ষা করেই পথ চেয়েছিলুম। তার পরে হয়ত একদিন শুনতে পাবে, যেখান থেকে উঠে এসেচি, তার কাছেই ফিরে চলে গেছি। কিন্তু তোমার কাছে এই আমার শেষ নিবেদন রইল সদ্ধ, বেঁচে থাকতে যখন কিছুই পেলুম না, মরণের পরে যেন ঐ চোখের দু’ফোট জল পাই। আত্মা বলে যদি কিছু থাকে, তার তাতেই তৃপ্তি হবে। আমার হাতটা তার হাতের মধ্যেই রইল, চুপ করে বসে রইলুম। এখন ভাবি, সেদিন যদি ঘুর্ণাগ্রেও জানতুম, মানুষের মনের দাম এই, একেবারে উণ্টে ধারায় বইয়ে দিতে এইটুকুমাত্র সময়, এইটুকুমাত্র মাল-মসলার প্রয়োজন, তা হলে যেমন করে হোক, সেদিন তার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে জানালা বন্ধ করে দিতুম, কিছুতেই তার Q??