পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৪১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

హ్చి সৰ্ব্বদেশে সৰ্ব্বকালে থিয়েটার জিনিসটা কেবল আনন্দ নয়, লোক-শিক্ষারও সাহায্য করে। বঙ্কিমবাবুর চন্দ্রশেখর বইখান একসময় বাঙলার ষ্ট্রেজে প্লে হইত। লরেন্স ফষ্ট্রর বলিয়া এক ব্যক্তি ইংরাজ নীলকর অতিশয় কদাচারী বলিয়া ইহাতে লেখা আছে। কৰ্ত্তাদের হঠাৎ একদিন চোখে পড়িল ইহাতে ক্লাস হেটুরেড না কি এমনি একটা ভয়ানক বস্তু তাছে যাহতে অরাজকতা ঘটিতে পারে। অতএব অবিলম্বে বইখান ষ্ট্রেজে বন্ধ হইয়া গেল। থিয়েটার-ওয়ালারা দেখিলেন ঘোর বিপদ । র্তাহার কৰ্ত্তাদের দ্বারে গিয়া ধন দিয়া পড়িলেন, কহিলেন হুজুর, কি অপরাধ ? কৰ্ত্তার বলিলেন, লরেন্স ফষ্টর নামটা কিছুতেই চলিবে না, ওটা ইংরাজী নাম। অতএব, ওটা ক্লাস হেটুরেড । থিয়েটারের ম্যানেজার কহিলেন, যে আজ্ঞা প্রভু ! ইংরাজী নামটা বদলাইয়া এখানে একটা পর্তুগীজ নাম করিয়া দিতেছি। এই বলিয়া তিনি ডিফুজ, না ডিসিলভা, না কি এমনি একটা—যা মনে আসিল, অস্তুত শবা বসাইয়া দিয়া কহিলেন, এই নিন। কর্তা দেখিয়া শুনিয়া কহিলেন, আর এই জন্মভূমি’ কথাটা কাটিয়া দাও— ওটা সিডিশন’ । ম্যানেজার অবাক হইয়া বলিলেন, সে কি হুজুর, এদেশে যে জন্সিয়াছি । কর্তা রাগিয়া বলিলেন, তুমি জন্মাইতে পার, কিন্তু আমি জন্মাই নাই। ও চলিবে না । * 譬 “তথাস্তু বলিয়া ম্যানেজার শব্দটা বদলাইয়া দিয়া প্লে পাশ করিয়া লইয়। ঘরে ফিরিলেন। অভিনয় মুরু হইয়া গেল। ‘ক্লাস হেটুরেড হইতে আরম্ভ করিয়া মায় ‘সিডিশন' পৰ্য্যন্ত বিদেশী রাজ-শক্তির যত-কিছু ভয় ছিল দূর হইল, ম্যানেজার আবার পয়সা পাইতে লাগিলেন। যাহারা পয়সা খরচ করিয়া তামাসা দেখিতে আসিল, তাহারা তামাসার অতিরিক্ত আরও যৎকিঞ্চিৎ সংগ্ৰহ করিয়া ঘরে ফিরিল— বাহির হইতে কোথাও কোন জটিলক্ষিত হইল না, কিন্তু ভিতরে ভিতরে সমস্ত বস্তুটা ছলনায় ও অসত্যের কালিতে কালো হইয়া রহিল। লরেন্স ফষ্ট্রর বলিয়া হয়ত কেহ ছিল না, ম্যানেজারের কল্পিত অদ্ভুত পর্তুগীজ নামটিও মিথ্যা। ব্যাপারটাও তুচ্ছ, কিন্তু ইহার ফল কোনমতেই তুচ্ছ নয়। স্বৰ্গীয় গ্রন্থকারের বোধ করি ইচ্ছা ছিল, সে-সময় বাঙলাদেশে ইংরাজ নীলকরের দ্বারা যে-সকল অত্যাচার ও অনাচার وا\ e 8