পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৪৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বিভূতি ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া বোধ করি বা দাদার কাছে কিছু প্রত্যাশা করিল। কিন্তু কিছুই না পাইয়া সে উঠিয় দাড়াইয়া বলিল, দাদা, আমি চললুম— এই বলিয়া সে ধীরে ধীরে অন্তঃপুরের অভিমুখে প্রস্থান করিল। শিবরতন কোন কথা কহিলেন না, তেমনি অধোমুখে স্থির হইয়া বসিয়া রহিলেন । পূজার বাড়ি, আজও আত্মীয়, অনাত্মীয়, কুটুম্ব, প্রতিবেশী ছেলেমেয়ে চাকরদাসীতে পরিপূর্ণ । এই-সকলের মাঝখানে যে নবউমা তাহার প্রাণাধিক স্নেহের পাত্রী, তাহারই এতবড় অপমান, এতবড় শাস্তি যে কি করিয়া অনুষ্ঠিত হইবে তাহা তিনি নিজেও ভাবিয়া পাইলেন না । তাছার নত নেত্র হইতে বড় বড় তপ্ত অশ্রুর ফোটা টপ টপ করিয়া মেঝের উপর ঝরিয়া পড়িতে লাগিল,—কিন্তু বিভূতি’ বলিয়া একবার ফিরিয়া ডাকিতে পারিলেন না । কেবল মনে মনে প্রাণপণ-বলে বলিতে লাগিলেন–কিন্তু, কিন্তু মা যে ! মা যে ! তার যে অপমান হয়েচে ! * ‘সধবাৱ একাদশী’ এই সুপরিচিত গ্রন্থখানির ভূমিকা লিখিতে যাওয়াই বোধ করি একটা বাড়াবাড়ি। অথচ এই কাজের জন্যই আমি অমুরুদ্ধ হইয়াছি। খুব সম্ভব, আমাকেই ইহার যোগ্য ব্যক্তি কল্পনা করিয়া লইয়াছেন। যে-বইয়ের দোষ-গুণ আজ অৰ্দ্ধ-শতাব্দীকাল ধরিয়া যাচাই হইতেছে,—বিশেষত:, যে মারাত্মক উৎপাত কাটাইয়া সম্প্রতি ইহা খাড়া হইয়া উঠিল, তাহাতে মূল্য লইয় ইহার আর দরদপ্তর করা সাজে না । বাঙলা-সাহিত্যের ভাণ্ডারে এ একখানি জাতীয় সম্পত্তি—এ সত্য মানিয়া লওয়াই ভাল । অতএব, গ্রন্থ-সম্বন্ধে নয়, আমি ইহার সংস্করণ-সম্বন্ধেই দুই-একটা কথা বলিব ।

  • "য়লচক্ৰ" নামে বারোয়ারী উপস্তাসের সুচন-স্বরূপ শরৎচন্দ্র-রচিত অংশ।

8૨૨