পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ অবিনাশ বলিলেন, তাও যদি হয়, মানুষে যদি তাদের ঠকিয়েও এসে থাকে, বিধবার ব্রহ্মচর্য্যের মধ্যে—না থাক্‌, ব্রহ্মচর্য্যের কথা আর ভুলব না, কিন্তু তার আমরণ সংযত জীবন-যাত্রাকে কি বিরাট পতিব্ৰতার মর্য্যাদাটাও দেব না ? কমল হাসিল, কহিল, অবিনাশবাবু, এও আর একটা ঐ শব্দের মোহ। সংযম’ বাক্যটা বহুদিন ধরে মর্য্যাদা পেয়ে পেয়ে এমনি স্ফীত হয়ে উঠেচে যে, তার আর স্থান কাল কারণ অকারণ নেই। বলার সঙ্গে সঙ্গেই সন্ত্রমে মামুষের মাথা নত হয়ে আসে । কিন্তু অবস্থা-বিশেষে এও ষে একটা ফাক আওয়াজের বেশি নয় এমন কথাটা উচ্চারণ করতেও সাধারণ লোকের যদি বা ভয় হয়, আমার হয় না। আমি সে দলের নই। অনেকে অনেকদিন ধরে কিছু একটা বলে আসচে বলেই আমি মেনে নিইনে। স্বামীর স্বতি বুকে নিয়ে বিধবার দিন কাটানোর মত এমন স্বতঃসিদ্ধ পবিত্রতার ধারণাও আমাকে পবিত্র বলে প্রমাণ না করে দিলে স্বীকার করতে বাধে। অবিনাশ উত্তর খুজিয়া না পাইয়া ক্ষণকাল বিমূঢ়ের মত চাহিয়া থাকিয়া কহিলেন, তুমি বল কি ? অক্ষয় কছিল, দুয়ে দুয়ে চার হয় এও বোধ করি আপনাকে প্রমাণ করে না দিলে স্বীকার করেন না ? কমল জবাবও দিল না, রাগও করিল না, শুধু হাসিল । আর একটি লোক রাগ করিলেন না, তিনি আগুবাবু। অথচ কমলের কথায় আহত হইয়াছিলেন তিনিই সবচেয়ে বেশি। . . অক্ষয় পুনশ্চ কহিল, আপনার এ-সব কদৰ্য্য ধারণ আমাদের ভদ্র-সমাজের নয়। সেখানে এ অচল। কমল তেমনি হাসিমুথেই উত্তর দিল, ভদ্র-সমাজে আচল হয়েই ত আছে। এ আমি জানি । ইহার পর কিছুক্ষণ পৰ্য্যন্ত সকলেই মৌন হইয়া রছিলেন। আণ্ডবাবু ধীরে ধীরে বলিলেন, আর একটি কথা তোমাকে জিজ্ঞেস করি কমল, পবিত্রতা অপবিত্রতার জন্য বলচিনে, কিন্তু স্বভাবতঃ যে অন্য কিছু ভাবে না—এই যেমন জামি। মণির স্বগীয়া জননীর স্থানে আর কাউকে বসবার কথা আমি যে কখনো কল্পনা করতেও পায়িঞ্জা । i কমল কবি, আপনি যে বুড়ে হয়ে গেছেন আশুবাবু। Er আপ্তবাবু বলিলেন, আজ বুড়ো হয়েচি মানি, কিন্তু সেদিন ত বুড়ে ছিলাম না। কিন্তু তখনে ত এ-কথা ভাবতে পারিনি? {s