শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রহ লে আমি জানি, কিন্তু যা হয়ে গেছে, তা গেছে, ভবিষ্যতে ত কিছু কিছু চিন্তা করতে হবে , তা বলে দিচ্চি। তাহার মুখের হালি সত্বেও কণ্ঠস্বব যেন ইহার শেষ দিকে কোমলতায় বিগলিত হইয়া উঠিল। কহিল, আর একটি মাত্র তার আপনাকে দিয়ে যাবে, সে আমার গরীব দুঃখী প্রজাদের ভার। আমি শত ইচ্ছে করেও তাদের ভাল করতে পারিনি, কিন্তু আপনি অনায়াসে পারবেন। নিৰ্ম্মলের প্রতি চাহিয়া কহিল, জামার কথাবার্তা শুনে আপনি আশ্চৰ্য্য হয়ে গেছেন, না নিৰ্ম্মলবাবু ? নিৰ্ম্মল মাথা নাড়িয়া বলিল, শুধু আশ্চৰ্য্য নয়, আমি প্রায অভিভূত হযে পডেচি। ভৈরবীব আসন ত্যাগ করে যে আপনি ইতিমধ্যে ছাড়পত্র পর্য্যন্ত সই ক’রে রেখেচেন, এ খবর ত আমাকে ঘূণাগ্রে জানাননি ? ষোড়শী হাসিমুখে কহিল, আমার অনেক কথাই আপনাকে জানানো হয়নি, কিন্তু একদিন হয়ত সমস্তই জানতে পাববেন । কেবল একটিমাত্র মানুষ সংসারে আছেন যাকে সকল কথাই জানিয়েচি, সে আমার ফকিরসাহেব । এ-সকল পরামর্শ বোধ করি তিনিই দিয়েচেন ? ষোড়শী তৎক্ষণাং জবাব দিল, না, তিনি আজ সকাল পর্য্যন্ত কিছুই জানতেন না, এবং ওই যাকে ছাড়পত্র বলচেন সে অামার কাল বারের বচন । যিনি একাজে আমাকে প্রবৃত্তি দিয়েচেন, শুধু তার নামটিই আমি সংসাবে সকলের কাছে গোপন রাখবো । জীবানন্দ কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিযা হঠাৎ একটা নিশ্বাস ফেলিয়া কহিল, মনে হচ্ছে যেন বাড়িতে ডেকে এনে আমার সঙ্গে কি একটা প্রকাগু তামাসা করচ ষোড়শী। এ বিশ্বাস করা যেন সেই মরফিয়া খাওয়ার চেযে শক্ত ঠেকচে । এতক্ষণ পরে নির্ণল তাহার পানে চাহিয়া একটু হাসিল, কহিল, আপনি ত তৰু এই কয়েক পা মাত্র হেঁটে এসে তামাসা দেখচেন, কিন্তু আমাকে কাজকৰ্ম্ম বাড়ি-ঘর ফেলে রেখে এই তামাসা দেখতে আটশ মাইল ছুটে আসতে হয়েচে । এ যদি সত্য হয়, আপনি যা চেয়েছিলেন অন্তত: সেটা পেয়ে গেলেন, কিন্তু আমার ভাগ্যে ষোলতানাই লোকসান। একে তামাস বলব কি উপহাস বলব ভেবেই পাচ্চিনে। বলিয়া সে লোকটার মুখের প্রতি আর একবার ভাল করিয়া চাহিয়াই দেখিতে পাইল, তাহার দুই চক্ষু আকস্মিক বেদনার ভারে যেন ভারাক্রাপ্ত । সে জবাব কিছুই দিল না, শুধু একটুখানি হাসিবার চেষ্টা করিল। নিৰ্ম্মল ষোড়শীকে প্রশ্ন করিল, এ-সকল ত আপনার পরিহাস ময় ? ষোড়শী বলিল, না নিৰ্ম্মলবাবু, আমার এবং আমার মায়ের কুৎসায় দেশ ছেয়ে গেল, এই কি আমার হালি-তামাসার সময় ? আমি সত্য সত্যই অবসর নিলাম। নিৰ্ম্মল কহিল, তা হলে বড় ছুখে পড়েই এ-কাজ আপনাকে করতে হ’লো। şțe
