শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রহ র্তাহার কথার ধরণে হেডমাস্টার ক্ষুণ্ণ হইলেন । ছেলেবেলার অকপট বন্ধু, তথাপি গুরুচরণ ভিতরের কথা ঔদাস্তের আবরণে গোপন করিতে চাহে, ইহাই মনে করিয়া তিনি আর প্রশ্ন করিলেন না । গুরুচরণ কৃষ্ণনগর হইতে বাড়ি ফিরিয়া দেখিলেন র্তাহার এই কয়েকদিনের অনুপস্থিতির অবসরে উঠোনে নানা স্থানে গৰ্ত্ত খুড়িয়া হরিচরণ এমন কাও করিয়া রাখিয়াছে যে পা ফেলা যায় না। বুঝিলেন যে তাহার মর্জি এবং সুবিধামত ভদ্রাসন ভাগ হইয়া প্রাচীর পড়িবে। তাহার টাকা আছে, অতএব আর কাহারও মতামতের প্রয়োজন নাই । নিজের ঘরে গিয়া কাপড় ছাড়িতেছিলেন, মেজবোঁমাকে সঙ্গে করিয়া পঞ্চুর মা আসিয়া দাড়াইল। গুরুচরণ সংবাদ জিজ্ঞাসা করিতে যাইতেছিলেন, অকস্মাৎ অক্ষুট আৰ্ত্তকণ্ঠে কাদিয়া মেজবেীমা কক্ষতলে লুটাইয়া পড়িল। পঞ্চুর মা নিজেও কাদিতে লাগিল, এবং কাদিতে কঁাদিতেই জানাইল যে, পরশু সকালে মেজবেীমাকে গলায় ধাক্কা মারিয়া হরিচরণ বাড়ি হইতে বাহির করিয়া দিয়াছিল, এবং সে উপস্থিত না থাকিলে মারিয়া আধমরা করিয়া দিত। ঘটনা সম্পূর্ণ উপলব্ধি করিতে গুরুচরণের অনেকক্ষণ লাগিল। তাহার পরেও তিনি মাটির মূৰ্ত্তির মত নিৰ্ব্বাক ও নিম্পন্দ থাকিয়া হঠাৎ প্রশ্ন করলেন, হরিচরণ সত্যি-সত্যিই তোমার গায়ে হাত দিলে বেীমা ? পারলে ? খানিক পরে জিজ্ঞাসা করিলেন, পরেশ বোধ হয় শয্যাগত । পঞ্চুর মা কহিল, তার ত কিছুই হয়নি বড়বাবু। এই ত আজ সকালের গাড়িতে কলকাতায় চলে গেল । হয়নি ? তার বাপের কীৰ্ত্তি সে তবে জেনে গেছে ? পঞ্চুর মা কহিল, সমস্তই। গুরুচরণের পায়ের তলার মাটি পর্য্যন্ত যেন দুলিতে লাগিল। কহিলেন, বেীমা, এতবড় অপরাধের শাস্তি যদি তার না হয় ত এ-বাড়ি থেকে বাস আমার উঠল । এখন সময় আছে, আমি গাড়ি ডেকে আনচি, তোমাকে আদালতে গিয়ে নালিশ করতে হবে। আদালতে নালিশ করার নামে মেজবোঁ চমকাইয়া উঠিল। গুরুচরণ বলিলেন, গৃহস্থের বেী-বির পক্ষে এ কাজ সম্মানের নয় সে আমি জানি, কিন্তু এতবড় অপমান যদি মুখ বুজে সহ কর মা, ভগবান তোমার প্রতি নারাজ হবেন। এর চেয়ে বেশি কথা আর আমি জানিনে । মেজবে ভূমিশয্যা হইতে উঠিয়া দাড়াইয়া কছিল, আপনি পিতৃতুল্য। আমাকে যা আদেশ করবেন আমি অসঙ্কোচে পালন করব । త్విby
