ঐকাত্ত এই তোমার দিদির বাড়ি ! এরা ত সাপুড়ে—মুসলমান ! ইন্দ্র কি-একটা কথা বলিতে উদ্যত হইয়াই, চাপিয়া গিয়া চুপ করিয়া আমার দিকে চাহিয়া রহিল । তাহার দুই চক্ষের দৃষ্টি বড় ব্যথায় একেবারে মান হইয়া গেল। একটু পরেই কহিল, একদিন তোকে সব কথা বলব। সাপ খেলাব দেখবি শ্ৰীকান্ত ? তাহার কথা শুনিয়া অবাকৃ হইয়া গেলাম। তুমি সাপ খেলাৰে কি ? কামড়ায় যদি ? ইন্দ্র উঠিয়া গিয়া ঘরে ঢুকিয়া একটা ছোট বাপি এবং লাপুড়ের বাশি বাহির করিয়া আনিল ; এবং মুমুখে রাখিয়া ডালার বাধন আলগা করিয়া বাশিতে কুঁ দিল। আমি ভয়ে আড়ষ্ট হইয়া উঠিলাম। ডালা খুলো না ভাই, ভেতরে যদি গোখরো সাপ থাকে ! ইন্দ্র তাহার জবাব দেওয়াও আবখ্যক মনে করিল না, শুধু ইঙ্গিতে জানাইল যে, সে গোখরো সাপই খেলাইবে ; এবং পরক্ষণেই মাথা নাড়িয়া নাড়িয়া বাশি বাজাইয়৷ ডালাটা তুলিয়া ফেলিল। সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাও গোখরো একহাত উচু হইয়া ফণা বিস্তার করিয়া উঠিল ; এবং মুহূৰ্ত্ত বিলম্ব না করিয়া ইন্দ্রর হাতের ডালায় একটা তীব্র ছোবল মারিয়া ঝাপি হইতে বাহির হইয় পড়িল । বাপ রে! বলিয়া ইন্দ্র উঠানে লাফাইয়া পড়িল । আমি বেড়ার গায়ে চড়িয়া বসিলাম। ক্রুদ্ধ সর্পরাজ বাশির লাউয়ের উপর আর একটা কামড় দিয়া ঘরের মধ্যে গিয়া ঢুকিল। ইন্দ্র মুখ কালি করিয়া কহিল, এটা একেবারে বুনো। আমি যাকে খেলাই, সে নয়। ভয়ে বিরক্তিতে রাগে আমার প্রায় কাল্লা আসিতেছিল, বলিলাম, কেন এমন কাজ করলে ? ও বেরিয়ে যদি শাহ জীকে কামড়ায় ? ইন্দ্রর লজ্জার পরিসীমা ছিল না। কহিল, ঘরের আগড়ট টেনে দিয়ে আসব ? কিন্তু যদি পাশেই লুকিয়ে থাকে ? আমি বলিলাম, তা হ’লে বেরিয়েই ওকে কামড়াবে। ইন্দ্র নিরুপায়ভাবে এদিকে-ওদিকে চাহিয়৷ বলিল, কামড়াক ব্যাটাকে ! বুনো সাপ, ধরে রাখে—গাজাখোর শালার এতটুকু বৃদ্ধি নেই। এই ষে দিদি ! এসো না, এসো না ; ঐখানে দাড়িয়ে থাকে। আমি ঘাড় ফিরাইয়া ইন্দ্রর দিদিকে দেখলাম। যেন ভস্মাচ্ছাদিত বহ্নি ! যেন যুগযুগাস্বরব্যাপী কঠোর তপস্যা সাঙ্গ করিয়া তিনি এইমাত্র আসন হইতে উঠিয়া আসিলেন। বা-কাকালে আটি বাধা কতকগুলি শুকনো কাঠ এবং ডানহাতে ফুলের সাজির মত একখানা ডালার মধ্যে কতকগুলি শাকৃ-সবজি। পরনে হিন্দুস্থানী মুসলমানীর মত জামাকাপড় গেরুয়া রঙে ছোপান, কিন্তু ময়লায় মলিন নয়। হাতে ছুগাছি গালার চুড়ি। সিৰায় হিন্দুসারীর মত সিদ্বরের আয়তি-চিহ্ন। তিনি কাঠের বোকাটা নামাইয়া রাখিয়া আগড়টা খুলিতে খুলিতে বলিলেন, কি ? ইঞ্জ মহাব্যস্ত হইয় tE
