শ্রীকান্ত লক্ষ নরমুণ্ড গণিয় লওয়া যায়—দেখিলাম কথাটা নিতান্ত অত্যুক্তি নয়। সমস্ত স্থানটাই প্রায় নরকঙ্কালে খচিত হইয়া আছে। গেণ্ডুয়া খেলিবার নরকপাল অসংখ্য পড়িয়া আছে ; তবে খেলোয়াড়েরা তখনও আসিয়া জুটিতে পারে নাই । আমি ছাড়া আর কোন অশরীরী দর্শক তথায় উপস্থিত ছিলেন কিনা, এ দুটা নশ্বর চক্ষে আবিষ্কার করিতে পারিলাম না। তখন ঘোর অমাবস্তা। সুতরাং খেলা শুরু হইবার আর বেশি দেরি নাই আশা করিয়া, একটা বালুর ঢিপির উপর চাপিয়া বসিলাম । বন্দুকটা খুলিয়া, টোটাটা আর একবার পরীক্ষা করিয়া, পুনরায় যথাস্থানে সন্নিবিষ্ট করিয়া, কোলের উপর রাখিয়া প্রস্তুত হইয়া রহিলাম । হার রে টোটা । বিপদের সময় কিন্তু সে কোন সাহায্য করিল না । পিয়ারীর কথাটা মনে পড়িল । সে বলিয়াছিল, যদি অকপটে বিশ্বাসই কর না, তবে কৰ্ম্মভোগ করিতে যাওয়া কেন ? আর যদি বিশ্বাসের জোর না থাকে, তাহা হইলে ভূত-প্রেত থাক বা না থাক, তোমাকে কিছুতেই যাইতে দিব না। সত্যই ত! এ কি দেখিতে আসিয়াছি ? মনের অগোচরে ত পাপ নাই । আমি কিছুই দেখিতে আসি নাই ; শুধু দেখাইতে আসিয়াছি—আমার সাহস কত । সকালে যাহার। বলিয়াছিল, ভীরু বাঙ্গালী কাৰ্য্যকালে ভাগিয়া যায়, তাহাদের কাছে শুধু এই কথাটা সপ্রমাণ করা যে, বাঙ্গালী বড় বীর । আমার বহুদিনের দৃঢ়-বিশ্বাস, মানুষ মরিলে আর বঁাচে না , এবং যদি বা বাচে, যেশ্মশানে তাহার পার্থিব দেইটকে অশেষ প্রকারে নিপীড়িত করা হয়, সেইখানেই ফিরিয়া নিজের মাথাটায় লাথি মারিয়া মারিয়া গড়াইয় বেডাঠবার ইচ্ছা হওয়া তাহার পক্ষে স্বাভাবিকও নয়, উচিতও ময় অস্তুতঃ আমার পক্ষে ত নয় । তবে কি না, মানুষের রুচি ভিন্ন | যদি বা কাহারও হয়, ৩1হা হইলে এমন একটা চমৎকার রাত্রে রাত্রি জাগিয়া আমার এতদূর আসাট নিষ্ফল হইবে না। অথচ এমন একটি গুরুতর আশাই আজিকাব প্রবীণ ব্যক্তিটি দিয়ছিলেন । হঠাৎ একটা দমক বাতাস কতকগুলো ধূলা-বালি উড়াইয়া গায়ের উপর দিয়া বহিয়া গেল , এবং সেটা শেষ না হইতেই, আর একটা এবং আর একটা বহিয়া গেল । মনে হইল, এ আবার কি ? এতক্ষণ ত বাতাসের লেশমাত্র ছিল না। যতই কেন না বুঝি এবং বুঝাই, মরণের পরেও যে কিছু-একটা অজানা গোছের থাকে এ সংস্কার হাড়ে-মাসে জড়ানো । যতক্ষণ হাড়-মাস আছে ততক্ষণ সেও আছে—তাহাকে স্বীকার করি, আবু না করি । সুতরাং এই দমকা বাতাসটা শুধু ধূলা-বালিই উড়াইল না, আমার মজ্জাগত সেই গোপন সংস্কারে গিয়াও ধা দিল। ক্রমশঃ ধীরে ধীরে br載
