পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ওর হাতে চাবি দিলুম বোমা। নইলে দ্বিজু আমাকে দেউলে করে দেবে । কিন্তু ও যে বাইরে থেকে এসেচে মা ? সতীর এ কথাটাও শেষ হইল না, দয়াময়ী হাসিয়া বলিলেন, বাইরের থেকে একদিন তুমিও এসেছিলে আর তারও অনেক আগে এমনি বাইরে থেকে আমাকে আসতে হয়েছিল । ওটা আপত্তি নয় বৌমা । কিন্তু আর আমার সময় নেই আমি চললুম। এই বলিয়া তিনি ঘর হইতে বাহিরে আসিয়া নীচে নামিয়া গেলেন । বন্দন বলিল, তোমাদের বাড়িতে এসে এ-কি জালে জড়িয়ে পড়লুম মেজদি । আমি যে নিশ্বাস ফেলবার সময় পাব না। তাই ত মনে হচ্ছে, বলিয়া সতী শুধু একটু হাসিল । ২৩ ংসারের বিপদ যে কোথায় থাকে এবং কোন পথে কখন যে আত্মপ্রকাশ করে ভাবিলে বিস্মিত হইতে হয়। কাজের মাঝখানে কল্যাণী আসিয়া কাদিয়া বলিল, মা, উনি বলচেন ওঁর সঙ্গে আমাকে এখুনি বাড়ি চলে যেতে। ট্রেনের সময় নেই— স্টেশনে বসে থাকবেন সে-ও ভালো তবু এ-বাড়িতে আর একদও না । পুষ্করিণী-প্রতিষ্ঠার শাস্ত্রীয় ক্রিয়া এইমাত্র চুকিয়াছে, এইমাত্র দয়াময়ী মণ্ডপ হইতে বাটতে আসিয়া পা দিয়াছেন। ভীষণ ব্যস্ততার মধ্যে তিনি থমকিয়া দাড়াইলেন, মেয়ের কথাটা ভালো বুঝিতে পারিলেন না, হতবুদ্ধি হইয়া কহিলেন, কে বলচে তোমাকে যেতে–শশধর ? কেন ? বড়দা ওঁকে ভয়ানক অপমান করেচেন—ঘর থেকে বার করে দিয়েচেন, এই বলিয়া কল্যাণী উচ্ছ্বসিত আবেগে কাদিতে লাগিল। চারিদিকে লোকজন, কোথাও খাওয়ানোর আয়োজন, কোথাও গানের আসর, কোথাও ভিখারীদের বাদ-বিতণ্ড, কোথাও ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতগণের শাস্ত্রবিচার-অগণিত মানুষের অপরিমেয় কোলাহল,—উহারই মাঝখানে অকস্মাৎ এই ব্যাপার । সতী ও মৈত্রেয়ী উপস্থিত হইল, বন্দন ভাড়ারে চাবি দিয়া কাছে আসিয়া দাড়াইল, আত্মীয়-কুটুম্বিনীগণের অনেকেই কৌতুহলী হইয়া উঠিল, শশধর আলিয়া } og