পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস মা সহাস্তে কহিতেন, ভাদ্র মাসেই ত বটে মা, আমারই মনে ছিল না ! এর পরেও আর যদি কখনো ও নালিশ করতে আসে ওর কান মলে দেব। আদালতে হারিয়া দ্বিজু রাগ করিয়া চলিয়া গেলে বধূকে কোলের কাছে টানিয়া লইয়া শাশুড়ী সক্ষেহে বলিতেন, ও ছেলেমানুষ কি না তাই বোঝে না। ঠাকুরপে বললে ভারি খুশী হয় । মাঝে মাঝে ডেকো, কেমন মা ? সতী রাজি হইয়া ঘাড় নাড়িয়া জবাব দিয়াছিল, আচ্ছা মা, মাঝে মাঝে তাই বলে ভাঁকবো । সেদিন যে ছিল বালিকা, আজ সে এত বড় বাড়ির গৃহিণী ! বিধবা হওয়ার পর হইতে শাশুড়ী ত থাকেন নিজের জপ-তপ এবং ধৰ্ম্ম-কৰ্ম্ম লইয়া, তথাপি তাহার সেদিনের সেই উপদেশটুকু পরবর্তী কালে সতীর অনেক দিন অনেক কাজে লাগিয়াছে। যেমন আজি । পূৰ্ব্ব পবিচ্ছেদে বর্ণিত ঘটনার প্রায় পোনর-ষোল দিন অতীত হইয়াছে, সকাল-বেলা সতী দেবরের পড়িবার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিতে করিতে ডাকিল, ভাই ঠাকুরপো— দ্বিজদাস হাত তুলিয়া থামাইয়া দিয়া বলিল, থাক বোঁদি, আর খোসামোদের আবশ্বক নেই, আমি করব । কি করবে শুনি ? তুমি যা হুকুম করবে তাই। কিন্তু দাদার এ ভারী অন্যায়। অন্যায়টা কিসে হ’ল বল ত ? দ্বিজদাস তেমনি রাগ করিয়াই কহিল, আমি জানি । এই মাত্র দাদার ঘরের স্বমুখ দিয়ে এসেচি। ভেতরে তিনি, মা এবং তোমার ষড়যন্ত্র যা হচ্চিল আমার কানে গেছে । তাদের সাহস নেই আমাকে বলেন, তাই তোমাকে ধরেচেন কাজ আদায়ের জন্তে । কত বড় অন্যায় বল ত ! সতী হাসিমুখে কহিল, অন্যায় ত নয় ঠাকুরপো। তারা বেশ জানেন যে তারা বলা মাত্রই জবাব আসবে, আমার মরবার ফুরস্কং নেই- কিন্তু বৌদিদি হুকুম করলে দ্বিজুর সাধ্য নেই যে না বলে । দ্বিজদাস ঘাড় নাড়িয়া কহিল, এইখানেই হয়েচে আমার মুস্কিল, আর এইখানেই পেয়েচেন ওঁরা জোর । কিন্তু কি করতে হবে ? সতী বলিল, মা কৈলাস-দর্শনে যাবেনই, আর তোমাকে তার সঙ্গে যেতে श्ट्र ।