পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ই, এই আমার প্রতিজ্ঞ । বিয়ে যদি কখনো করি, মস্ত সুখের আশায় ষেন সমস্ত বিড়ম্বনায় না পা দিই। তাই অশোকবাবুকে কাল সতর্ক করে দিয়েচি। আমাকে ভালোবাসলেই আমি ছুটে পালাবো । শুনে তিনি কি বললেন ? বললেন না কিছুই, শুধু দু'চোখ মেলে চেয়ে রইলেন। দেখে বড় দুঃখ হ'লে দ্বিজুবাবু। দুঃখ যদি সত্যিই হয়ে থাকে ত আজো আশা আছে ; কিন্তু জানবেন এ-সব শুধু মাসীর বাড়ির ঘোরতর প্রতিক্রিয়া,—শুধু সাময়িক । বন্দনা বলিল, অসম্ভব না হতেও পারে । কিন্তু শিখলুম অনেক। ভাবি, ভাগ্যে এসেছিলুম কলকাতায় নইলে কত জিনিস ত অজানা থেকে যেতো। দ্বিজদাস কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, বেশি সময় আর নেই, এবার শেষ উপদেশ আমাকে দিয়ে যান কি আমাকে করতে হবে। বন্দন পরিহাসের ভঙ্গিতে মাথাটা বার-কয়েক নাড়িয়া বলিল, উপদেশ চাই ? সত্যিই চাই নাকি ? দ্বিজদাস বলিল, ই । সত্যিই চাই। আমি দাদা নই, আমার বন্ধুর প্রয়োজন, উপদেশের প্রয়োজন । বিবাহ করতে আমাকে বলে গেলেন, আমি তাই করবো । কিন্তু ভালোবাসা না পাই, বন্ধুত্ব না পেলে যত ভার দিয়ে গেলেন, আমি বইবো কি করে ? দ্বিজুর মুখে পরিহাসের আভাস মাত্র নাই, এ কণ্ঠস্বর বন্দনাকে বিচলিত করিল, কহিল, ভয় নেই দ্বিন্ধুবাবু, বন্ধু আসবে, সত্যিকার প্রয়োজনে ভগবান তাকে আপনার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে যাবেন, এ বিশ্বাস রাখবেন। প্রত্যুত্তরে দ্বিজু কি একটা বলিতে গেল, কিন্তু বাধা পড়িল। বাহির হইতে মৈত্রেীর সাড়া পাওয়া গেল-দ্বিজুবাৰু আছেন এ ঘরে ? মা আপনাকে একবার ডাকচেন । দ্বিজু উঠিয়া দাড়াইল, বলিল, বারোটায় গাড়ি, এগারোটায় বার হতে হবে। ঠিক সময়ে এসে ডাক দেবো। মনে থাকে যেন। এই বলিয়া সে ব্যস্ত হইয়া বাহির হইয়া গেল । Astos