পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ তার ব্যাটাদের খবর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েচে রমা ! ( গোবিন্দর প্রতি ) চল খুড়ে, আমরা ও-দিকটা একবার দেখে-শুনে আসিগে । সন্ধ্যাও হ’ল । গোবিন্দ । চল বাবা, চল । [ উভয়ের প্রস্থান ] রমেশ । হুকুম দা ও রম, ওঁর একার অমতেই এত বড় অন্যায় হতে পারে না । আমি এখুনি গিয়ে বাধ কাঠিয়ে দেব। রমা । কিন্তু মাছ আটকে রাখার কি বন্দোবস্ত করবেন ? রমেশ । এত জলে কোন বন্দোবস্ত হওয়াই সম্ভবপর নয়। এ ক্ষতি আমাদের স্বীকার করতেই হবে । না হলে গ্রাম মারা যায় । { রমা নীরব ] রমেশ । তা হলে অনুমতি দিলে ? রম । না । এত টাকা আমি লোকসান করতে পারব না । তা ছাড়া বিষয় আমার ভাইয়ের । আমি অভিভাবক মাত্র ! রমেশ । না, আমি জানি অদ্ধে ক তোমার। রমা। শুধু নামেই বাবা নিশ্চয় জানতেন সমস্ত বিষয় যতীনই পাবে। তাই অৰ্দ্ধেক আমার নামে দিয়ে গেছেন । রমেশ । ( মিনতির কণ্ঠে ) বুমা, এ ক'টা টাকা ? এদিকে তোমাদের অবস্থা সকলের চেয়ে ভাল । তোমার কাছে এ ক্ষতিই নয় । আমি মিনতি জানাচ্চি, এর জন্যে এত লোককে অন্নহীন কোরো না । যথার্থ বলচি, তুমি যে এত নিষ্ঠুর হতে পার আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। রুমা । নিজের ক্ষতি করতে পারিনে বলে যদি নিষ্ঠুর হই, না হয় তাই ভাল, আপনার যদি এতই দয়া, নিজেই না হয় ক্ষতিপূরণ করে দিন না । রমেশ। রম, মানুষ খাটি কি না চেনা যায় শুধু টাকার সম্পর্কে। এই জায়গায়টায় নাকি ফাকি চলে না, তাই এইখানেই মামুধের যথার্থ রূপ ধরা পড়ে। তোমারও আজ তাই পড়েচে । কিন্তু তোমাকে আমি কখন এমন করে ভাবিনি। ভেবেচি, তুমি এর চেয়ে অনেক, অনেক ওপরে। কিন্তু তুমি তা নও। তোমাকে নিষ্ঠুর বলাও ভুল। তুমি অতি নীচ, অতি ছোটো। রম । কি আমি ? কি বললেন ? রমেশ । তুমি অত্যন্ত হীন এবং নীচ। আমি যে কত ব্যাকুল হয়ে উঠেটি, সে তুমি টের পেয়েছ বলেই আমার কাছে দুঃখীর মুখের গ্রাসের দাম আদায়ের দাবী করলে। কিন্তু বড়দাও মুখ ফুটে এ-কথা বলতে পারেননি। পুরুষ হয়েও তার