পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামের মুমতি । ঐ ষে সামনে কলমের আমবাগান করেচ, বেশি বড় হয়নি ত—ও কুডুলের এক এক ঘায়েই কাত হবে—ওর একটিও আজ রাত্তিরে থাকবে না । কাল এসে শিশিবোতলগুলো গুড়ো করে দিয়ে যাব । বলিয়াই সে বাহির হইয়া চলিয়া গেল । ডাক্তার নিক্তি ধরিয়া আড়ষ্ট হইয়া বসিয়া রছিলেন । একজন বৃদ্ধ তখন সাহস করিয়া বলিল, ডাক্তারবাবু, আর বিলম্ব ক’রে না। ভাল ওষুধ লুকোনো-টুকোনো যা আছে, তাই নিয়ে যাও। ও রামঠাকুর—যা বলে গেছে তা ফলাবে, তবে ছাড়বে। ডাক্তার নিক্তি রাখিয়া বলিলেন, আমি থানার দারোগার কাছে যাব ; তোমরা সব সাক্ষী । যে বৃদ্ধ পরামর্শ দিতেছিল, সে বলিল, সাক্ষী ? সাক্ষী কে দেবে বাৰু ? অামার ত কুইনাইন খেয়ে কান ভেঁ৷ ভেঁা করতেছে—রাম ঠাকুর কি যে বলে গেল, তা শুনতেও পেলুম না। আর দারোগ করবে কি বাৰু? ও দেবতাটি দেখতে ছোট, কিন্তু ওনার বাগদী ছোকরার দলটি ছোট নয়। ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারলে থানার লোক দেখতে আসবে না, দারোগাবাবু এক অঁাটি খড় দিয়ে উপকার করবে না ; ও সব আমরা পারব না-ওনাকে সবাই ডরায় ! তার চেয়ে যা বলে গেছে, তাই কর গে। একবার দেখ দেখি আপনি-আজ দুখানা রুটি-টুট খাব না কি ? ডাক্তার অন্তরে পুড়িতেছিলেন, বুড়ার হাত দেখিবার প্রস্তাবে দাউ দাউ করিয়া জলিয়া উঠিলেন—সাক্ষী দিবিনে তোরা, তবে দূর হ এখান থেকে। আমি কারুর হাত দেখতে পারব না-মরে গেলেও কাউকে ওষুধ দেব না-দেখি, তোদের কি গতি হয় ? বৃদ্ধ লাঠিটা হাতে লইয়া উঠিয়া পড়িল-দোষ কারে নয় ডাক্তারবাৰু, উনি বড় শয়তান । ঠাকুরকে খবরট একবার দিয়েও যেতে হবে, না হলে হয় ত বা মনে করবে, থানায় যাবার মতলব আমরা দিয়েচি ৷ বিযেটাক বেগুন-চার লাগিয়েচি--বেশ ডাগর হয়েও উঠেচে—হয়ত আজ রাত্তিরেই সমস্ত উপড়ে রেখে যাবে। বাগদী ছোড়াগুলো ত রাত্রে ঘুমোয় না। বাবু থানায় না হয় আর একদিন যেয়ো—সাজ । এক শিশি ওষুধ নিয়ে ওনারে ঠাণ্ড করে এসো। বৃদ্ধ চলিয়া গেল, আর যাহারা ছিল তাহারাও সরিয়া পড়তে লাগিল। নীলমণি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া মানবজীবনের শেষ অভিজ্ঞতা—সংসারের সৰ্ব্বোত্তম জ্ঞানের বাক্যটি আবৃত্তি করিয়া উঠিয়া বাড়ির ভিতরে গেলেন—দুনিয়ার কারও ভাল করতে নেই । -- নারায়ণী বাহিরের দিকের জানালায় চোখ রাখিয়া ছট্‌ফট্‌ করিতেছিলেন। রাম বাড়ি ফিরিয়া আসিয়া ডাকিল, গোবিন্দ, খাচা ধরবি আয়। Չեծ موeسپہ